সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আলোচনায় ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তর

আলোচনায় ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তর

আমেরিকার সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তর খুব সহজ হবে না বলে উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা ছড়িয়ে পড়েছে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, বিষয়টি ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই অনেক বেশি জটিল করে ফেলবেন। যদিও মার্কিন আইনে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি সুস্পষ্ট করে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে তারপরও ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন পর্যন্ত পরাজয় মেনে নিতে রাজি হননি। বিধায় এ আশঙ্কা জোরদার হচ্ছে, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া খুব সহজ হবে না। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকার করে তিনি বরং আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। যদি বিষয়টি তাই হয় তাহলে কোথাও কোথাও হয়তো নতুন করে ভোট গণনা করতে হতে পারে; যার কারণে ক্ষমতা হস্তান্তর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকান্ড স্থগিত হয়ে যাবে।

কংগ্রেসের রিপাবলিক দলের একটি অংশ বলছে, দীর্ঘ আইনি লড়াই ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে পারে যা পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বিপজ্জনক প্রভাব ফেলবে। সূত্র বলছে, “আমরা যখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকব তখন কিন্তু বিশ্ব বসে থাকবে না।”

ওয়াশিংটনে অবস্থিত আমেরিকার একটি মিত্র দেশের দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে, “অনিশ্চিত ঘটনাবলি নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত। এই ধরনের লড়াই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমেরিকার বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য ক্ষতিকর।

তবে বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ বলেছেন, ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট যদি নির্বাচনে পরাজিত হন এবং  সরকারিভাবে যদি সেই ফলাফল প্রকাশ হয় তাহলে তিনি পরাজয় স্বীকার করলেন কি করলেন না- তাতে কিছু আসে যায় না। ২০ জানুয়ারির পর কী হতে পারে? ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বিবিসিকে জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি দুপুর ১২টায়। “এর পর তিনি আর প্রেসিডেন্ট থাকবেন না, যদি না তিনি দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচনে জয়লাভ করেন।” সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলছেন, আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের বর্তমান ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হবে এবং সেসময়ই ২০২০-এর নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী শপথ নেবেন এবং শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনিই প্রেসিডেন্ট হবেন। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সাধারণত কংগ্রেস ভবনের সামনে হয়ে থাকে, কিন্তু আইনগতভাবে এরও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

২০০ বছর আগের দশা হবে ট্রাম্পের : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে যে টালবাহানা শুরু করেছেন এ ধরনের অবস্থা প্রায় ২২৫ বছর আগেও একবার হয়েছিল। ১৮০১ সালের ৪ মার্চ। যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস ১৮০০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী টমাস জেফারসনের হাতে ক্ষমতা দিতে অস্বীকার করেছিলেন। তাই অনেক বিশ্লেষক বলেন, ২০ জানুয়ারির ‘‘মধ্যাহ্নের নীতিটি’’ তো এখনো ট্রাম্পের জন্য লেখা হয়নি। সেটি হলো, অ্যাডামস ট্রাম্পের মতোই একগুঁয়েমি করেছিলেন। তিনি অফিস   ছাড়বেন না। তাই অফিসই তাকে বের করার সব আয়োজন করেছিল। সে সময় হোয়াইট হাউসের কর্মচারীরা প্রেসিডেন্ট অ্যাডামসের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছিলেন। অ্যাডামসই ছিলেন প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি নতুন সরকারি বাসভবন অর্থাৎ হোয়াইট হাউসের প্রথম বাসিন্দা ছিলেন। প্রেসিডেন্টের জন্য চলমান সব সুরক্ষা তুলে নেওয়া হয়। সব অফিশিয়াল যোগাযোগ কেটে দেওয়া হয়। এভাবেই অ্যাডামস হোয়াইট হাউস ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন।

 

সর্বশেষ খবর