সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্ব

দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্ব

চলতি বছরের চেয়েও খারাপ হতে পারে আগামী বছর বা ২০২১ সাল। আর আগামী বছর বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করলেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রধান ডেভিড বিসলি।

মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী এই সংস্থার প্রধান বিসলি জানান, ‘ডব্লিউএফপিকে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান বিশ্বের সব রাষ্ট্রনেতাদের উদ্দেশ্যে নিঃসন্দেহে এক তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা। ২০২১ সালে একাধিক দুর্ভিক্ষের সাক্ষী হতে চলেছে পুরো বিশ্ব। তা ঠেকাতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। রাষ্ট্রনেতাদের এটা বুঝতে হবে।’ তার দাবি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং কভিড অতিমারী সংবাদের শিরোনাম দখল করে রাখার ফলে বিশ্ব খাদ্য সংকটের বিষয়ে এই মুহূর্তে সচেতনতার অভাব রয়েছে।

ওই সাক্ষাৎকারে বেসলি আরও বলেন, ‘সময় থাকতে থাকতে রাষ্ট্রনায়কদের পরিস্থিতিটা বুঝতে হবে।’ তাঁর আক্ষেপ, গত কয়েক মাস ধরে সংবাদমাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও করোনাভাইরাসের খবর সর্বাধিক প্রচারিত হয়েছে। অথচ গোটা বিশ্বের খিদের সঙ্গে লড়াইয়ের কথা কেউ বলেনি। অথচ এই লড়াইটার কথা বলা খুব জরুরি। তিনি আরও বলেন, ‘২০২০ সালে দুর্ভিক্ষের কিনারায় দাঁড়িয়েছিল গোটা বিশ্ব। কিন্তু রাষ্ট্রনেতাদের মোটা টাকা অনুদান, আর্থিক প্যাকেজ ও ঋণ দেওয়ার প্রবণতার জেরে তা থেকে রেহাই মিলেছে। এখনই উপযুক্ত পদক্ষেপ না নিলে ২০২১ সালের এই বিপদ এড়ানো যাবে না।’ এ জন্য তিনি এখনই যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তার মতে, ২০২০ সালেই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারত বিশ্ব। কিন্তু কভিড আবহ মোকাবিলায় উদার আর্থিক প্যাকেজ, ঋণ শোধ প্রক্রিয়ায় মেয়াদ বৃদ্ধি এবং আর্থিক অনুদানের সাহায্যে তা এড়াতে পেরেছে অধিকাংশ রাষ্ট্র। তবে এ মুহূর্তে ফের সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার লকডাউন ও অচলাবস্থার সম্ভাবনা ঘনিয়ে আসার জেরে নিম্ন ও মধ্য আয়কারী দেশগুলোর আর্থিক সংকট মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

পাশাপাশি ২০২০ সালে যা অর্থ পাওয়া গেছে, ২০২১ সালে তা মিলবে না বলেও সতর্ক করেছেন বিসলি। এ কারণে নোবেল কমিটির সঙ্গে বিশ্বনেতাদের ভার্চুয়াল ও প্রত্যক্ষ আলোচনা, বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে ভাষণ এবং আলোচনার মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের আগামী ১২-১৮ মাসের মধ্যে সম্ভাব্য দুর্বিপাকের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলছেন।

তিনি জানিয়েছেন, মহামারীর দ্বিতীয়, তৃতীয় ঢেউ রুখতে ফের কিছু দেশ লকডাউনের পথে হাঁটতে পারে। এর জেরে অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হবে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত দেশগুলোতে এর প্রভাব পড়বে।

তিনি এ অবস্থা থেকে আপাতত মুক্তি পেয়ে অর্থের একটি হিসাব দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, ২০২১ সালে সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ এড়াতে ১৫০ কোটি ডলার প্রয়োজন ডব্লিউএফপির। তার হিসাবে, প্রকল্পের তহবিলে মজুত অর্থের সঙ্গে আরও কিছু অর্থ যুক্ত হলে বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষ রোধ করা সম্ভব হবে। তার জেরে অস্থিরতা ও পরিযোজন রোধ করাও সম্ভব বলে তার দাবি।  এপি, হিন্দুস্তান টাইমস

সর্বশেষ খবর