শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিষ্ঠুরতার ভয়াল বর্ণনা

উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিষ্ঠুরতার ভয়াল বর্ণনা

২০০৯ সালে শিনজিয়াং প্রদেশের কিছু জায়গায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি হওয়ার পর থেকে উইঘুর মুসলিমদের ওপর অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছে চীন। দেশের একদম পশ্চিমে অবস্থিত উইঘুর অধ্যুষিত এই প্রদেশে বসবাসকারী মানুষের ওপর অত্যাচারের কাহিনি শুনে শিউরে উঠেছে গোটা বিশ্ব। তারপরও কোনো হেলদোল নেই শি জিন পিংয়ের সরকারের। ওই অত্যাচারের ভয়াবহতার কিছু অংশ উঠে এসেছে প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায়।

চীনের শিনজিয়াংয়ের নারী সাইরাগুল সাউতবে। শিনজিয়াংয়ের ‘পুনঃশিক্ষা ক্যাম্প’ বা রিএডুকেশন ক্যাম্প থেকে মুক্তি পেয়েছেন বছরদুয়েকের বেশি সময় আগে। তিনি দুই সন্তানের মা। কিন্তু তাকে এখনো তাড়িয়ে ফেরে তাদের ওপর চালানো ভয়াবহতা, অমানবিকতা আর সহিংসতা। এসবই তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন আটক অবস্থায়। সাইরাগুল সাউতবে বর্তমানে বসবাস করছেন ইউরোপের দেশ সুইডেনে। তিনি একজন চিকিৎসক এবং শিক্ষাবিদ। সম্প্রতি তিনি একটি বই প্রকাশ করেছেন। তাতে তিনি ওই বন্দীশিবিরের ভয়াবহতা, যা প্রত্যক্ষ করেছেন তা তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে প্রহার, যৌন নির্যাতন, জোর করে বন্ধ্যাকরণ। সম্প্রতি তিনি এসব নিয়ে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আল জাজিরাকে। তিনি বলেছেন, এসব সংখ্যালঘুকে জোরপূর্বক শূকরের মাংস খাওয়ানো হচ্ছে। এমনকি উইঘুরে শূকরের ফার্ম বিস্তৃৃত করেছে চীন। সাইরাগুল সাউতবে বলেন, প্রতি শুক্রবার আমাদের শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হতো। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ দিনটিকে বাছাই করে নিত। কারণ, এ দিনটি সপ্তাহের অন্য দিনের চেয়ে বেশি পবিত্র মুসলিমদের কাছে। যদি কেউ এই মাংস খেতে অস্বীকৃতি জানাত তাহলে তার ওপর নেমে আসত নির্দয়-নিষ্ঠুর শাস্তি। তিনি দাবি করেন, এসব নীতি গ্রহণ করা হয়েছে উইঘুর মুসলিম বন্দীদের অবমাননা করতে এবং তাদের হীন করার উদ্দেশ্যে। সাইরাগুল সাউতবে বলেন, যখন শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হতো তখনকার অনুভূতি প্রকাশ করার কোনো ভাষা নেই। আমার মনে হতো আমি, আমি নই। আমি অন্য কেউ। আমার চারপাশে যারা থাকতেন বন্দী, আমার মতো তাদেরও চোখ-মুখ কালো হয়ে যেত। এমন পরিস্থিতি মেনে নেওয়া ভীষণ কঠিন।

আল জাজিরা বলছে, সাইরাগুল সাউতবে এবং অন্যরা যে সাক্ষ্য দিয়েছেন চীনের ওইসব বন্দীশিবিরের, তাতে বোঝা যায়, চীন শিনজিয়াংয়ে কি কঠোর দমনপীড়ন চালাচ্ছে সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাসকে পাল্টে দিতে।

সর্বশেষ খবর