বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অমিত শাহ’র মধ্যস্থতায়ও কাজ হলো না

নতুন কৃষি আইন বাতিলে কৃষকরা অনড় সরকারের নতুন প্রস্তাব নাকচ কৃষকদের

অমিত শাহ’র মধ্যস্থতায়ও কাজ হলো না

কৃষি বিল নিয়ে গতকাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন বিরোধীদলীয় নেতারা -এএফপি

দুই সপ্তাহ ধরে ভারত উত্তপ্ত কৃষক আন্দোলন নিয়ে। সরকারের করা আইন বাতিল চেয়ে মাঠে নেমেছে কৃষক। ফলে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরসহ একাধিক মন্ত্রী দফায় দফায় কৃষকের সঙ্গে বসেন। কিন্তু তাঁরা আলোচনায় ব্যর্থ হচ্ছেন বলে বিজেপির প্রভাবশালী নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে মাঠে নামতে হয়েছে। তিনি নতুন করে তিন দফা প্রস্তাবও দিয়েছেন। কিন্তু কৃষকরা তাদের দাবিতে অনড়। তারা অমিত শাহের প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন। কৃষক নেতাদের অনেকের মন্তব্য, তাঁরা জানেন, সরকার একবারে কিছুই মানবে না। কিন্তু তাঁরা যদি বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে পারেন, তা হলে সরকার তাঁদের দাবি মানতে বাধ্য হবে। অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর কৃষক নেতারা অনড় মনোভাব নিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, সরকারকে তিনটি কৃষি আইন বাতিল করতে হবে। আর কৃষকের অনমনীয় মনোভাবের ফলে গতকাল তাদের সঙ্গে সরকারের যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে।

 

সরকারের প্রস্তাব ছিল, মান্ডি বা কৃষি বাজার এখন যেমন আছে ভবিষ্যতেও সেরকম থাকবে। এমএসপি নিয়ে সরকার লিখিত প্রতিশ্রুতি দেবে। আর বিরোধ হলে আদালতে যেতে পারবে কৃষকরা। এই তিনটি পরিবর্তন আইনে করা হবে। কিন্তু কৃষক নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, ওই আইন তাঁদের সর্বনাশ করবে। তাই আইন বাতিল করতেই হবে। কৃষক নেতাদের মতে, এমএসপি চালু থাকবে বলে সরকার প্রতিশ্রুতি দিতে চায়। কিন্তু প্রশ্নটা এমএসপি চালু রাখা নিয়ে নয়। তা আইন করে বাধ্যতামূলক করা নিয়ে। না হলে বেসরকারি সংস্থা ও করপোরেটগুলো কোনোদিন এমএসপি মানবে না। সবসময় তারা এমএসপির থেকে অনেক কম দামে জিনিস কিনবে। এখন যেমন কিনছে। সরকার এমএসপি বাধ্যতামূলক করতে রাজি নয়। বাকি যে দুটি পরিবর্তন করার কথা বলা হয়েছে, সেটাও বড় কিছু নয় বলে তাঁদের মত।

ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত বলেছেন, সরকার যদি অনড় থাকে তাহলে কৃষকও অনড় থাকবেন। সরকার আইন বাতিল করুক। তার কমে তাঁরা কিছুই মানবেন না। অর্থাৎ, কৃষকরা সরকারের ওপর থেকে চাপ কমাতে নারাজ। বিরোধী দলগুলোও সরকারকে চাপ দিতে এদিন কৃষি বিল নিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করবেন। সেখানে রাহুল গান্ধী, শরদ পাওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরি, টি আর বালু, ডি রাজার মতো নেতারা থাকবেন। এদিকে কৃষকরা তাদের আন্দোলন আরও জোরদারে করেছে। গতকাল পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ থেকে আরও কয়েক হাজার কৃষক দিল্লির সীমানায় চলে এসেছে। দিল্লিতে ঢোকার তিনটি সীমানা কার্যত বন্ধ। কৃষক নেতা ও কৃষির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা সরকারি পদক ফিরিয়ে দিতে শুরু করেছেন। গতকাল কৃষি বিজ্ঞানী বারীন্দ্রপাল সিং জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের গোল্ডেন জুবিলি পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন।

সর্বশেষ খবর