শিরোনাম
রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বেকার ভাতা বন্ধ হচ্ছে লাখো মার্কিনির

বিলে সই করেননি ট্রাম্প

বেকার ভাতা বন্ধ হচ্ছে লাখো মার্কিনির

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের মহামারী সহায়তা এবং সরকারি ব্যয় প্যাকেজ বিলে সই না করায় গতকাল থেকে দেশটির লাখ লাখ বেকারের ভাতা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বড় অঙ্কের এই বিল নিয়ে অসন্তুষ্ট ট্রাম্প এ সপ্তাহে বিলের সংস্কার দাবি করেন। ওই বিলের মধ্যে ৮৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তায় ব্যয় হবে। যার মধ্যে এ মহামারীর কারণে চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়া মানুষদের জন্য বিশেষ অর্থ সহায়তাও অন্তর্ভুক্ত। মহামারীর কারণে আমেরিকার লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। তাদের জন্য সরকার থেকে যে সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে তার মেয়াদ ২৬ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে। নতুন তহবিল পাওয়া না গেলে তারা আর অর্থ সহায়তা পাবেন না। বিলের বাকি এক দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সরকারের সাধারণ ব্যয় নির্বাহের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম অধিদফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মহামারীর মধ্যে সরকারের এই বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। নতুন তহবিল না পাওয়ায় দেশটির প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ মানুষের ভাতা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া আগামী মঙ্গলবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারও ব্যয় মেটানোর অর্থের অভাবে অচল হয়ে পড়বে।  কয়েক মাসের মতবিরোধের পর গত সপ্তাহান্তে রিপালিকান ও ডেমোক্র্যাটরা ওই বিলের বিষয়ে একমত হন। তখন হোয়াইট হাউসও ওই বিলে সমর্থন দিয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি জো বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন ট্রাম্প। বিল নিয়ে প্রথম কোনো আপত্তি না জানালেও সোমবার রাতে ভোটের মাধ্যমে কংগ্রেসে বিল পাস হওয়ার পর বেঁকে বসেছেন তিনি। ট্রাম্পের অভিযোগ, বিলে বিশেষ স্বার্থে, সাংস্কৃতিক প্রকল্পে এবং বৈদেশিক সাহায্যে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মহামারীর কারণে সংকটে পড়ে যাওয়া লাখ লাখ আমেরিকানকে উদ্দীপনা দিতে এককালীন চেক হিসেবে যে ৬০০ মার্কিন ডলার দেওয়া হচ্ছে তা খুবই কম। তিনি ওই অর্থ বাড়িয়ে দুই হাজার মার্কিন ডলার করার দাবি করেছেন। বড়দিনের দিন এক টুইটে ট্রাম্প লেখেন, ‘কেন রাজনীতিকরা জনগণকে মাত্র ৬০০ ডলার দেওয়ার পরিবর্তে দুই হাজার ডলার দিতে চাইছে না? আমাদের জনগণকে ওই অর্থ দিন।’ অনেক অর্থনীতিবিদও বলছেন, উদ্দীপনার জন্য যে অর্থ দেওয়া হচ্ছে তার পরিমাণ খুবই কম। কিন্তু তাৎক্ষণিক সহায়তা হিসেবে এটা খুবই প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। তাই একে তারা স্বাগতই জানিয়েছেন।

এদিকে ধারণার চেয়েও দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হতে চলেছে চীন। পশ্চিমাদের তুলনায় করোনাভাইরাস মহামারী ভালোভাবে মোকাবিলা করছে চীনারা। এর জেরেই পূর্বনির্ধারিত সময়ের পাঁচ বছর আগে মার্কিনিদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে তারা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক অর্থনৈতিক পরামর্শক সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল সিইবিআরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৮ সালেই বর্তমান বিশ্বের বৃহত্তম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি পরস্পরের সঙ্গে জায়গা বদল করবে। সংস্থাটির হিসাবে, ২০২৩ সালের মধ্যে চীন উচ্চআয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ২০৩৫ সালেও বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির খেতাব থাকবে তাদের দখলে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত মাসে জানিয়েছিলেন, তার পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনায় ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের অর্থনীতির আকার দ্বিগুণ করা ‘খুবই সম্ভব’।

 তার ওই পরিকল্পনায় আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ‘আধুনিক সমাজতন্ত্র’ অর্জনের কথা বলা হয়েছে।

সিইবিআর বলছে, বিশ্বে সবার আগে করোনাভাইরাস মহামারীর আঘাত লেগেছিল চীনের অর্থনীতিতে। কিন্তু দ্রুতই তারা সেটি পুনরুদ্ধার করেছে। এ কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত এশিয়ায় কী হচ্ছে সেদিকে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া।

দ্রুত অর্থনৈতিক শক্তি শুধু চীনেই বাড়ছে না, সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছে এশিয়ার আরেক দেশ ভারতও। বর্তমানে ছয় নম্বরে থাকলেও আগামী এক দশকের মধ্যে তারা হয়ে উঠবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। জাপান বর্তমানে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হলেও ২০৩০ সালে তারা নেমে যাবে চতুর্থ অবস্থানে। রয়টার্স

 

সর্বশেষ খবর