সোমবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ভ্যাকসিন নিয়ে কূটনৈতিক লড়াই

প্রতিদিন ডেস্ক

ভ্যাকসিন নিয়ে কূটনৈতিক লড়াই

সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার পর এর প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন জোগাড়ের জন্য বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক লড়াই জমে উঠেছে। যদিও এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে ধনী দেশগুলো। ফলে এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকাসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এসব ধনী দেশের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে। সূত্র : অনলাইন।

খবরে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন নিয়ে নতুন কূটনীতির দুয়ার খুলে গেছে। কভিড-১৯ নিয়ে গবেষণা ও উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত কিছু দেশ এই ভ্যাকসিনকে ব্যবহার করছে তাদের প্রভাব বিস্তার ও স্বার্থসিদ্ধির কাজে। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য ১৯৪টি দেশে করোনার দুটি টিকার জন্য ১ হাজার ৫০০ কোটিরও বেশি ডোজের প্রয়োজন হবে। তবে এখানে কে আগে বা পরে পাবে- সেই হিসাব করা হয়নি। নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, করোনার ২৭৩টি ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চললেও মোট ১২টি ভ্যাকসিন গবেষণার তৃতীয় ধাপ পার করেছে। ৬টি ভ্যাকসিনকে বিভিন্ন দেশের সরকার জনগণের ওপর ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়েছে। এগুলো হলো- ফাইজার-বায়োএনটেক কোম্পানির তৈরি টোজিনামেরান, মডার্না কোম্পানির এমআরএনএ-১২৭৩, চীনা কোম্পানি সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাকের দুটি ভ্যাকসিন, রুশ কোম্পানি গামালেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তৈরি একটি এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি একটি ভ্যাকসিন। এসব ভ্যাকসিন হাতে পাওয়ার জন্য ধনী দেশগুলো অনেক আগে থেকেই আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছে।

ভার্জিনিয়া কমনওলেথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জুডি টুইগ বলেন, দ্রুত ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে একটি মরিয়া ভাব তৈরি হয়েছে। যা পাই তাই নেব। যেখানে যা পাব নিয়ে নেব এমন একটা মনোভাব দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে বেশ কিছু দেশ প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র : একক বাজার হিসেবে বিশ্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের। মার্কিন সরকার এর মধ্যেই শত শত কোটি ডলার ব্যয় করেছে ভ্যাকসিন কেনার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব সেবামন্ত্রী অ্যালেক্স অ্যাজার বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে ভ্যাকসিন পাবে সেটা আগে দেশের জনগণের জন্য ব্যবহার করা হবে। তারপরই অন্যদেশে ভ্যাকসিন পাঠানোর কথা বিবেচনা করা হবে। তবে জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকার অন্য দেশের সঙ্গে ভ্যাকসিন শেয়ার করার প্রশ্নে কী অবস্থান নেবেন- তা এখনো পরিষ্কার নয়। রাশিয়া : ভ্যাকসিন সরবরাহের প্রশ্নে অস্পষ্ট মার্কিন অবস্থান রাশিয়ার জন্য তৈরি করেছে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের এক নতুন সুযোগ। মস্কোর সরকার ঘোষণা করেছে, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ২০টি দেশ তাদের তৈরি স্পুটনিক-ভি   ভ্যাকসিনের আগাম চালান চেয়েছে। ভ্যাকসিন কূটনীতির ক্ষেত্রে রাশিয়া তার সোভিয়েত আমলের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। চীন : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় বিশ্ব সংকট মোকাবিলায় এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ভ্যাকসিন গবেষণায় অগ্রগতির পথ ধরে চীনা কূটনীতিতে এক    নতুন পর্যায় শুরু হয়েছে। যেমন, সিনোভ্যাক ইন্দোনেশিয়ার সরকারের সঙ্গে ‘প্রায়োরিটি অ্যাক্সেস’ চুক্তি করেছে, যার আওতায় ১ কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা    এরই মধ্যে সে দেশে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। একই ঘটনা ঘটছে বিশ্বের অন্য প্রান্তেও।

ভারত : গত মাসে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে দিল্লিতে দায়িত্বরত ৬৪ জন বিদেশি কূটনীতিক হায়দ্রাবাদে দুটি ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী কোম্পানি বায়োলজিক্যাল-ই এবং ভারত বায়োটেক ঘুরে এসেছেন। তবে দ্য প্রিন্ট নামে দিল্লিভিত্তিক ওয়েবসাইট সরকারি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, প্রতিবেশীদের কাছে কভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহের কাজে ভারত ‘তাড়াহুড়ো’ করবে না।

সর্বশেষ খবর