বুধবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সুপ্রিম কোর্টে স্থগিত কৃষি আইন তবুও অনড় ভারতের কৃষকরা

‘এর সঙ্গে মানুষের জীবন-মৃত্যুর বিষয় জড়িত। আমরা এই আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন’

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতে আপাতত কৃষকদের জয় হলো। দিল্লির সীমানায় চলা আন্দোলনের জেরে সরকারের করা তিন ‘বিতর্কিত’ কৃষি আইন স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তার মানে এই আইন এখন আর চালু থাকবে না। সর্বোচ্চ আদালত একটি কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটি আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করবে। কমিটি সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট দেবে। প্রধান বিচারপতি বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের রায়, ‘পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া পর্যন্ত তিনটি কৃষি আইন চালু করা যাবে না।’ এই তিন আইনের ফলে কৃষকদের সঙ্গে চুক্তি করতে পারত করপোরেট সংস্থাগুলো। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর শস্য গুদামজাত করার ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরও আন্দোলন থেকে সরে আসছে না কৃষক সংগঠনগুলো। জয় কিষান সংগঠনের নেতা যোগেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে তাঁরা স্বাগত জানাচ্ছেন, কিন্তু তাঁদের দাবি হলো, তিনটি আইন পুরোপুরি বাতিল করতে হবে। সেই দাবিতে আন্দোলন চলবে। সুপ্রিম কোর্ট নিজের সুবিধার জন্য কমিটি করতে পারে। তার সঙ্গে কৃষকদের কোনো সম্পর্ক নেই। কৃষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রত্যাহার করার প্রশ্নই ওঠে না। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘এর সঙ্গে মানুষের জীবন-মৃত্যুর বিষয় জড়িত। আমরা এই আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা আন্দোলনকারীদের জীবন ও সম্পত্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে চাই। আমাদের হাতে একটিই ক্ষমতা আছে, আইনগুলো সাসপেন্ড করা।’ সে ক্ষমতারই প্রয়োগ করেছে সর্বোচ্চ আদালত। সরকারও কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য আরও সময় চেয়েছিল। কিন্তু প্রধান বিচারপতি বোবদে বলেন, ‘আপনারা কার্যকরভাবে বিষয়টি সামলাতে পারছেন বলে মনে হচ্ছে না। রক্তপাত হলে কে দায়ী থাকবে?’

সর্বোচ্চ আদালতের কাছে সরকার জানায়, কৃষকরা যদি ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কোনোরকম বাধা দেয়, তা হলে তা বিড়ম্বনার কারণ হবে। তবে কৃষক নেতা যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন, ‘২৬ জানুয়ারি আমাদের প্রস্তাবিত ট্রাক্টর মার্চের পরিকল্পনা বহাল আছে। কোথায় বলা আছে, কৃষক ওইদিন দিল্লিতে ঢুকতে পারবে না? আমরা তো জাতীয় পতাকাকেই উঁচুতে তুলে ধরতে চাইছি।’ এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ধাক্কা খেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আইন স্থগিত হয়ে গেল। কৃষক আন্দোলনও উঠল না। সলিসিটর জেনারেল আবার বলেছিলেন, এই আন্দোলনে খালিস্তানিরা ঢুকে পড়েছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, একদিনের মধ্যে তথ্যপ্রমাণসহ হলফনামা দিতে হবে সরকারকে।

সর্বশেষ খবর