শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ট্রাম্প অভিশংসিত, এরপর কী?

ট্রাম্প অভিশংসিত, এরপর কী?

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসন করার পর তাতে স্বাক্ষর করেন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি -এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ইমপিচ করার পর তার ভাগ্যে এখন কী ঘটবে তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্ন। এ প্রশ্ন এসেছে এ জন্য যে, ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদ আর মাত্র ছয় দিন। আগামী বুধবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণ করবেন। এই সময়ের মধ্যে কী তাকে সিনেটে    ইমপিচ করার মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে চূড়ান্তভাবে বিদায় করা যাবে? উত্তর হচ্ছে, প্রতিনিধি পরিষদের সিদ্ধান্ত এখন সিনেটে পাঠানো হবে। ইমপিচমেন্টের বিষয়টি সিনেটে পৌঁছানোর পরপরই সেখানে তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়। সবচেয়ে বড় যে প্রশ্ন তা হচ্ছে- সিনেটে ভোটাভুটি কবে হবে?

সিনেটে ট্রায়াল কখন শুরু হবে? ইমপিচ প্রস্তাবের ট্রায়াল শুরুর জন্য ডেমোক্র্যাটরা আহ্বান জানিয়েছিল সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেলকে। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, ছুটি শেষে সিনেট অধিবেশন বসবে ১৯ জানুয়ারি। তার আগে এই ট্রায়াল শুরু করা যাবে না। এর অর্থ হলো, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা ছাড়ার পর এই ট্রায়াল চলতে থাকবে সিনেটে। তবে সিনেটে এই ট্রায়াল শুরু হওয়ার আগে অবশ্যই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে সিনেটের কাছে  হস্তান্তর করতে হবে প্রতিনিধি পরিষদকে।

এখন কী হবে : ট্রাম্প দোষী কিনা তা নির্ধারণ করতে সেখানে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে। তারপর প্রস্তাবের ওপর ভোট হবে। যদি সিনেটের কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন তাহলে তিনি অভিযুক্ত হবেন। সিনেটে মোট সদস্য সংখ্যা ১০০। ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করতে হলে কমপক্ষে ৬৭ ভোট লাগবে। সিনেটে এখন ডেমোক্র্যাটদের ভোট ৫০ রিপাবলিকানেরও ৫০। ফলে ইমপিচ করতে ১৭ জন রিপাবলিকানের ভোট প্রয়োজন হবে ডেমোক্র্যাটদের।

সিনেট ট্রায়ালে কি ব্যবস্থা : প্রতিনিধি পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে একটি আর্টিকেলের ওপর ট্রাম্পকে অভিশংসন অনুমোদন দিয়েছে। সেটা হলো ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতায় উসকানি’ দেওয়া। ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা সৃষ্টির আগে ট্রাম্প তার হাজারো সমর্থকের উদ্দেশে যে বক্তব্য রেখেছিলেন, সেদিকে জোর দেওয়া হয়েছে এতে।

ক্ষমতা ছাড়ার পরও কি শাস্তি পাবেন ট্রাম্প : এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘লেট ইমপিচমেন্ট’ সংবিধানসম্মত। অর্থাৎ একজন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা থেকে সরে গেলেও তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া চালানো যেতে পারে। তাদের মত, অভিশংসন শুধু ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই ব্যবহার করা হয় না। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্ট পদে বা সরকারি পদে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ যদি তিনি সিনেটে ইমপিচ হন তাহলে তিনি আর কখনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবেন না। ট্রাম্প বেশ কয়েকবার বলেছেন, ২০২৪ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তাতে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। কিন্তু তা আর সম্ভব হবে না।

প্রক্রিয়া কতদিন চলবে : যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কীভাবে অভিশংসিত করতে হবে এ বিষয়ে সিনেটের    নিজস্ব আইন আছে। বর্তমান আইনের অধীনে একটি   ট্রায়াল অল্প দুই-চার দিনের মধ্যে হতে হয়।

সর্বশেষ খবর