যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা ছাড়ার বাকি আর তিন দিন। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার চীনের সরকারি কর্মকর্তা ও বড় কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালানোর অভিযোগে এ পদক্ষেপ নিলেন তিনি। পাশাপাশি ৯ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিনিয়োগসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। মূলত চীনের রাষ্ট্রীয় সংস্থা, সে দেশের কমিউনিস্ট পার্টি এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের আমেরিকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বসিয়েছে ট্রাম্প সরকার। পাশাপাশি সে দেশের জ্বালানি সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল অফশোর অয়েল করপোরেশন’-এর ওপরও নিষেধাজ্ঞা বসানো হয়েছে, যাতে আমেরিকার কোনো সংস্থা বা ব্যবসায়ী তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনে যুক্ত হতে না পারে। এর পাশাপাশি আরও ৯টি চীনা সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা বসিয়েছে পেন্টাগন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিমান নির্মাণ সংস্থা কোম্যাত এবং মোবাইল ফোন নির্মাণকারী সংস্থা শাওমি কর্প। অভিযোগ, চীনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে তাদের।
আমেরিকার যেসব সংস্থা ওই সংস্থাগুলোতে বিনিয়োগ করেছে, ২০২১ সালের ১১ নভেম্বরের মধ্যে তাদের সব ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প সরকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাণিজ্যযুদ্ধসহ নানা বিষয়ে চীনের সঙ্গে বহুদিন ধরেই উত্তেজনায় জড়িয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন ক্ষমতার একেবারে শেষ পর্যায়ে এসেও ট্রাম্পের এমন বৈরিতাপূর্ণ আচরণে দেশ দুটির মধ্যে এ উত্তেজনা আরও বাড়বে। তিনি এমন একসময় এ পদক্ষেপ নিলেন, যখন গত ৩ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জো বাইডেন আগামী বুধবার হোয়াইট হাউসে বসতে চলেছেন। ট্রাম্পের সর্বশেষ এ পদক্ষেপ বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ট্রানজিশন টিম। খবর রয়টার্সের।যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগে থেকেই দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর বেইজিংয়ের একচ্ছত্র ভূখ-গত দাবি নাকচ করে আসছে। এই জলপথ একদিকে খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ, অন্যদিকে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক পথ। ওয়াশিংটন বলছে, ওই সাগরে চীনের মতোই মালিকানা দাবি করে চলা এ অঞ্চলের ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনকে বেইজিং ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তবে চীনের অভিযোগ, ওয়াশিংটন দক্ষিণ চীন সাগরে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টায় লিপ্ত।
চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যেসব দেশ নিজেদের সার্বভৌম অধিকার ও স্বার্থরক্ষায় দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর মালিকানা দাবি করছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তাদের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’