শনিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

আবার ভাঙছে তৃণমূল?

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

আবার ভাঙছে তৃণমূল?

শতাব্দী রায়

কিছুদিন আগে বড় ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। যখন মমতার ডান হাত বলে খ্যাত শুভেন্দু অধিকারীসহ দলের ছয় বিধায়ক ও এক এমপি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। আবার তৃণমূল ভাঙতে পারে। দল ছাড়তে পারেন সাংসদ শতাব্দী রায় ও রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শতাব্দী জানিয়েছেন, শনিবার বেলা ২টায় তাঁর রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। ওই দিন তিনি দিল্লি আসছেন। অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর কথা হতে পারে। শতাব্দী ফেসবুক পোস্টে বীরভূমে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের মানুষের প্রতি বার্তা দিয়ে লিখেছেন ‘...সম্প্রতি অনেকেই প্রশ্ন করেছেন কেন আমাকে বহু কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। তাদের বলছি যে আমি সর্বত্র যেতে চাই। আপনাদের সঙ্গে থাকতে আমার ভালো লাগে।’ এর পরই লেখেন ‘কিন্তু মনে হয় কেউ কেউ চায় না আমি আপনাদের কাছে যাই। বহু কর্মসূচির খবর আমাকে দেওয়া হয় না। না জানলে আমি যাব কী করে? এ নিয়ে আমারও মানসিক কষ্ট হয়। গত ১০ বছরে আমি আমার বাড়ি থেকে বেশি সময় আপনাদের সঙ্গে কাটিয়েছি। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি কাজ করার। তাই এ নতুন বছরে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করছি যাতে আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি থাকতে পারি।’ তিনি আরও লেখেন, ‘সাংসদ অনেক পরে, তার অনেক আগে থেকেই শুধু শতাব্দী রায় হিসেবেই বাংলার মানুষ আমাকে ভালোবেসে এসেছেন। যদি কোনো সিদ্ধান্ত নিই ১৬ জানুয়ারি শনিবার দুপুর ২টায় জানাব।’ ফেসবুক পোস্টে গতকাল তিনবারের সাংসদ শতাব্দী বলেন, ‘আমি দিল্লি যাচ্ছি। সেখানে বন্ধু, আত্মীয়স্বজনরা আছেন। তাদের সঙ্গে দেখা হবে।’ অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি। বলেন ‘এটা কোনো অযৌক্তিক নয় যে আমি অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে পারি। আমি একজন সাংসদ। আমি সংসদ ভবনে যেতে পারি। স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক থাকে। তা ছাড়া তিনবারের সাংসদকে দিল্লি যাওয়ার কারণ বলতে হবে?’ স্টার প্রসঙ্গে শতাব্দীর মন্তব্য ‘দল আমাকে শতাব্দী রায় বানায়নি। আমি নিজেই একজন স্টার ছিলাম। আমার প্রতি দলের সামান্যতম সম্মান রাখা উচিত। অনুষ্ঠানে আমায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না এতে আমার খারাপ লাগছে। আমি বাড়ি বসে ওয়েব সিরিজ দেখে ও বেতন নিয়ে কাটাতে পারতাম। কিন্তু তাই চাই না।’ দলের মধ্যে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণার পরই শতাব্দীর মান ভাঙাতে এদিন দুপুরে কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহের বাড়িতে যান তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন তিনি। কিন্তু সে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি বলেই খবর। কারণ কুণাল জানান, ‘শতাব্দী আমার পুরনো বন্ধু। তাঁর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা হলো। শতাব্দী রায় তাঁর সিদ্ধান্ত নেবেন।’

কুণালের পাশাপাশি তৃণমূলের সিনিয়র নেতা সৌগত রায়ও ফোনে অভিমানী শতাব্দীর সঙ্গে কথা বলে মান ভাঙার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি বলেই জানা গেছে। এ ব্যাপারে সৌগত রায়ও জানান, ‘দেখা যাক শনিবার শতাব্দী কী সিদ্ধান্ত নেন।’

এদিকে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক বেশ কিছু দিন হলো ভালো যাচ্ছে না। তিনি আজ বিকালে ফেসবুক লাইভ করে তাঁর সিদ্ধান্ত জানাবেন। ফলে রাজ্যের রাজনীতি আজ রীতিমতো চিত্তাকর্ষক হয়ে উঠতে চলেছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর