শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে টুইটযুদ্ধ

ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে টুইটযুদ্ধ

ভারতের কৃষক আন্দোলন এখন ভারত ছেড়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে তা সামাজিক মাধ্যমে। আর তা তারকাদের দরবারেও। দুই মাসের বেশি সময় ধরে ভারতে কৃষক আন্দোলন চলছে। দিল্লির সীমানায় এখনো বসে আছে কৃষক। এরই মধ্যে মঙ্গল ও বুধবার একাধিক ক্রীড়া এবং অভিনয় তারকা কৃষক বিদ্রোহকে সমর্থন জানিয়ে টুইট করেন। যার মধ্যে দীপিকা পাড়ুকোন, তাপসী পান্নু যেমন আছেন তেমনই আছেন সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিংহ, অলিম্পিকে দেশকে মেডেল এনে দেওয়া বীজেন্দ্র সিংরা। কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। প্রীতি জিনতাও সমর্থনের কথা গোপন করেননি। তবে বুধবার শোরগোল ফেলে দেন বিশিষ্ট হলিউড গায়িকা ও অভিনেত্রী রিহানা। নিজের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে তিনি লেখেন, আন্দোলনরত কৃষককে কেন সমর্থন করবে না গোটা বিশ্ব? এখানেই শেষ নয়, রিহানার টুইটের কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিবেশ আন্দোলনের অন্যতম মুখ গ্রেটা থনবার্গ কৃষকের সমর্থনে টুইট করেন। আন্তর্জাতিক দুই ব্যক্তিত্বের টুইটের পরই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। বুধবার রাতেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানায়, রিহানাদের টুইট ‘অতিরঞ্জিত’ বা ‘সেনসেশনাল’। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, দেশের একাংশের কৃষক নতুন কৃষি আইন নিয়ে আন্দোলন করছে। এতে সবার সমর্থন নেই। পুরো বিষয়টি না জেনে এ ধরনের টুইট করা উচিত নয়। বস্তুত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতির পরই সরকারের সমর্থনে ক্রীড়া ও অভিনয় জগতের আরেকটি অংশকে দাঁড়াতে দেখা যায়। পরপর টুইট করতে থাকেন শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলি, অনিল কুম্বলেসহ একাধিক বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটার। তাদের বক্তব্য, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা জরুরি। বিদেশি শক্তি যেন সার্বভৌমত্বে আঘাত হানতে না পারে।

অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগনের মতো অভিনেতারাও সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের টুইটের ভাষাও  কার্যত একই রকম। গতকাল সকালে টুইট করেছেন বিখ্যাত ও প্রবীণ গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। তিনিও সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের সময় থেকেই অভিনয় জগতে টুইটি ভাগ স্পষ্ট তৈরি হয়েছিল। দীপিকা, তাপসীরা শুধু সরকারবিরোধী টুইট করেননি, বিভিন্ন আন্দোলনেও শামিল হয়েছেন। জেএনইউয়ে আহত  ছাত্রদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন দীপিকা। সে জন্য তাকে অ্যান্টি ন্যাশনাল বা জাতীয়তাবিরোধী   তকমাও পেতে হয়েছে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবার কৃষক আন্দোলন ঘিরে তারকার টুইটযুদ্ধ স্পষ্ট মেরুকরণ তৈরি করে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, রিহানার টুইটকে এতটা গুরুত্ব দিয়ে সরকার নিজেই নিজের অস্বস্তি বাড়িয়েছে।

এর ফলে পুরো বিষয়টি লাইমলাইট পেয়ে গেছে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গণতন্ত্রের লক্ষণ। পরোক্ষে তারাও কৃষক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বলে কোনো কোনো কূটনীতিকের বক্তব্য। ডয়চে ভেলে

সর্বশেষ খবর