শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
ডয়চে ভেলের বিশ্লেষণ

ভ্যাকসিন অগ্রাধিকারে প্রশ্নের মুখে ইউরোপ

ভ্যাকসিন অগ্রাধিকারে প্রশ্নের মুখে ইউরোপ

আফ্রিকায় জনসংখ্যা বেশি হলেও টিকা পাওয়া দুর্লভ

বায়োনটেক-ফাইজার, মডার্না, জ্যানসেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, কিউরভ্যাক বিশ্বকে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে কতগুলো ভ্যাকসিন এসে গেল। এক বছরেরও কম সময়ে এতগুলো ভ্যাকসিন তৈরি করা নিঃসন্দেহে খুব বড় অর্জন। তবে এই অর্জন এসেছে ‘ভ্যাকসিন অগ্রাধিকার’-এর বাস্তবতাকে সঙ্গে নিয়ে। বিষয়টি এমন, ইউরোপের চেয়ে আফ্রিকার জনসংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু ইইউ আফ্রিকার ভ্যাকসিন কেনার সুযোগ না রেখেই সব নিয়ে নিয়েছে।

আফ্রিকা এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় পশ্চিমা দেশগুলোর, বিশেষ করে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার নেওয়ার ব্যাপারটি অবশ্য নতুন নয়। দশকের পর দশক ধরে বাণিজ্য, রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং সামরিক শক্তি- সব দিকেই তো পশ্চিমাদের প্রাধান্য। কিন্তু কভিড-১৯ মহামারী দুটি কারণে আলাদা। স্মরণকালে এই প্রথম পশ্চিমা দেশগুলোকেও ভয়াবহতম স্বাস্থ্যবিষয়ক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। আফ্রিকা মহাদেশ এমন সমস্যায় বহুবার পড়েছে। দ্বিতীয়ত, বার্লিন প্রাচীরের পতনের পর এই প্রথম পশ্চিমের এক দেশ আরেক দেশের সঙ্গে বিশ্ব রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে প্রভাব বাড়ানোর জন্য প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

এদিকে আফ্রিকার কিছু দেশ ভ্যাকসিন নিয়ে খুব অসহায় অবস্থায় পড়েছে। নিজের দেশের সার্বিক অবস্থা মেনে এবং স্বীকার করে তাঞ্জানিয়ার প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, ভ্যাকসিন কিনতে চাওয়ার পরিকল্পনা নেই তার দেশের। রুয়ান্ডার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগনেস বিনাগোয়াহো তীব্র ক্ষোভ নিয়ে ইইউর উদ্দেশে বলেছেন, ‘এবার খোলামেলা বলে ফেলুন, আমার কাছে আমার জনগণ সবার আগে। আমরা সবাই সমান এই মিথ্যে কথাটা দয়া করে আর আমাকে বলতে আসবেন না।’ কেনিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মুতাহি কাগওয়ে বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর নির্ভর করা হবে নির্বোধের কাজ।

সাম্য নয়, আরও বিভাজন : যারা আশা করেছিলেন কভিড-১৯ ধনী এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে মিলিয়ে দেবে, তারা এখন হতাশ। ভ্যাকসিন বিশ্বকে এক না করে, বিভাজন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর