বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
মিয়ানমারে অভ্যুত্থান

সু চির দলের দফতর দখলে নিল সেনা

সু চির দলের দফতর দখলে নিল সেনা

অভ্যুত্থানের এক সপ্তাহ পার হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দেশবাসীর সামনে বিবৃতি দিয়ে সামরিক সরকারের দাবি ছিল- নির্বাচন ভুয়া, তাই সরকার বাতিল করা হলো। আর রাতেই মিয়ানমারের প্রধান নেত্রী সু চির রাজনৈতিক দফতরের দখল নিল সেনা।

বিবিসি বার্মিজ বিভাগের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমার সেনাবাহিনী মঙ্গলবার রাতে দরজা ভেঙে  এনএলডির সদর দফতরে প্রবেশ করে। দেশটিতে হাজার হাজার মানুষ এনএলডিকে সরকার থেকে সরিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে আন্দোলন করছে এবং এর মধ্যেই সু চির দলীয় দফতরে এ   হামলার ঘটনা ঘটল। অনেকেই অং সান সু চি ও তার দলের সিনিয়র নেতাদের মুক্তি দাবি করছেন।

গত সপ্তাহে অভ্যুত্থানের পর থেকে সু চিকে দেখা যায়নি। পাশাপাশি দেশের সিনিয়র নেতাদের অবস্থান সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। সু চির দল এনএলডি তাদের ফেসবুক পাতায় লিখেছে, ‘সামরিক স্বৈরাচার সাড়ে ৯টার দিকে এনএলডি সদর দফতরে তল্লাশি ও তছনছ করেছে।’ তবে আর বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। ওই তল্লাশি সংঘটিত হয়েছে দেশজুড়ে রাত্রিকালীন কারফিউর মধ্যে স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে। ওদিকে দেশটিতে এখনো পাঁচজনের বেশি সমবেত হওয়া নিষিদ্ধ আছে। যদিও এর মধ্যে বিক্ষোভ চলছে এবং হাজার হাজার প্রতিবাদকারী মঙ্গলবার চতুর্থ দিনের মতো রাস্তায় নেমে আসে। পুলিশও ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করে। ফলে বেশ কিছু ব্যক্তির আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওদিকে বুধবার ভোরে সরকারি চাকুরেদের একটি বড় অংশ রাজধানী নেপিদোতে সমবেত হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যম খবর দিয়েছে।

যদিও সেনা সরকার জানায়, দ্রুত নির্বাচন ঘোষণা করা হবে। সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে তীব্র হয়েছে গণবিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা সু চি ও তার দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী নেপিদোজুড়ে   গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে    গণবিক্ষোভে ফাঁকা গুলি, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। একাধিক স্থানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আহত ও রক্তাক্ত বিক্ষোভকারীদের ভিডিও দেখা গেছে। এদিকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় এক নারীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথায় গুলি লাগে।

মিয়ানমারে নির্বাচিত সরকারের নেত্রী থাকার সময় সু চি নীরব ছিলেন রোহিঙ্গা নির্যাতন বিষয়ে। সেনার ভূমিকাকে সমর্থন করেছিলেন। এই কারণে আন্তর্জাতিক মহলে ধিকৃত হন নোবেলজয়ী নেত্রী। মনে করা হচ্ছিল তিনি বর্মি সেনার হাতের পুতুল হয়েছেন। অবশেষে গত সোমবার থেকে তিনি গৃহবন্দী। ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। বিবিসি জানায়, মার্শাল ল’ উপেক্ষা করেই রাজপথে নেমে এসেছেন অগণিত মানুষ। বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে গ্রামাঞ্চলে চলছে সেনা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ।

সর্বশেষ খবর