বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

২০ ভাগ মানুষের মৃত্যু জ্বালানি দূষণে

কয়লা, ডিজেল, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের জ্বালানিতে মৃত্যু বাড়ছে

বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ পরিবর্তনের প্রভাব যে সবচেয়ে ভয়ংকর তা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হতে হয় না। আর বিশেষজ্ঞরা তো বলেই দিয়েছেন করোনাভাইরাসের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী পরিবেশ পরিবর্তনের প্রভাব। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ জার্নাল। তাতে বলা হয়েছে, কঠিন রোগ বা দুর্ঘটনাজনিত কারণ নয়, মৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে জ্বালানির দূষণ। আর জ্বালানি থেকে যে দূষণ ছড়াচ্ছে তাতে গোটা বিশ্বে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে মৃত্যু হয় একজনের। কয়লা, ডিজেল, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের জ্বালানিতে মৃত্যু বাড়ছে বলে জানিয়েছে ওই সমীক্ষা। চীন, ভারত, ইউরোপ ও আমেরিকার উত্তর-পূর্বের দেশগুলোতে এ সমস্যা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। সমীক্ষা বলছে প্রতি বছর ৮৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় জ্বালানি পোড়ানোর ফলে। সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, এ মৃত্যুগুলোর প্রতিটি অকালমৃত্যু। ২০১৭ সালের একটি রিপোর্ট বলছে, বাইরে যারা নিয়মিত বেরোন তাদের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে জ্বালানির দূষণ সম্পর্কিত। মাঠে খরকুটো থেকে শুরু করে বড় বড় কারখানার ধোঁয়া থেকে দাবানল- সব কিছুই বাড়াচ্ছে দূষণ। ২০১৭ সালে এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪২ লাখ। শুধু ভারতেই জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য মারা গেছে কয়েক লাখ মানুষ। গোটা বিশ্বের তুলনায় সেই সংখ্যার গড় ৩০ শতাংশ। লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজের অ্যাটমোস্ফেরিক কেমিস্ট্রির গবেষক ইলয়েস মেরাইস জানান, যথেষ্ট প্রভাব ফেলছে জ্বালানির দূষণ। সরাসরি মানুষের স্বাস্থ্যে ধাক্কা দিচ্ছে এ সমস্যা। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশিত একটি উপগ্রহ চিত্র জানিয়েছিল দাবানল ও জীবাশ্ম জ্বালানির ফলে যে ধূলিকণা হচ্ছে, তা সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করে। এর থেকে তৈরি হচ্ছে ক্ষতিকারক পার্টিকলস। এ পার্টিকলসই শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করছে। যা মৃত্যু ঘটাচ্ছে লাখ লাখ মানুষের।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জোয়েল শয়ারজ জানান, ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে যা ধূলিকণার পরিমাণ ছিল, তার থেকে অনেকটাই বেড়েছে ২০১৯ সালে। প্রতি বছরই ধীরে ধীরে বাড়ছে এ পরিমাণ, ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা, ফুসফুসের নানা রোগের মুখোমুখি হচ্ছে মানবসভ্যতা। গবেষকদের পরামর্শ, যদি এখনই এর কোনো বিকল্প খুঁজে না পাওয়া যায় ও তার ব্যবহার শুরু না হয়, তবে সমস্যা মারণ হয়ে উঠবে। কারণ যা মনে করা হয়েছিল, তার থেকে দ্বিগুণ ক্ষতি করছে জ্বালানির দূষণ।

সর্বশেষ খবর