শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
সিনেটে অভিশংসন বিচার

ট্রাম্প সবাইকে ‘মৃত্যুর মুখে’ ফেলেছিলেন

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঐতিহাসিক দ্বিতীয় অভিশংসনের বিচারের মধ্য দিয়ে ৬ জানুয়ারি ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে তাঁর সমর্থকদের দিয়ে বিদ্রোহ প্ররোচিত করেছিলেন কিনা তা প্রমাণিত হবে। আর তা প্রমাণ করতে ট্রাম্পের দ্বিতীয় অভিশংসনের বিচারে তাঁর সমর্থকদের ক্যাপিটল ভবনে হামলার নতুন কিছু নাটকীয় ভিডিও সিনেটরদের দেখানো হয়েছে। ট্রাম্পের নিজের বক্তব্য এবং টুইটকে তাঁর বিরুদ্ধেই ব্যবহার করে ডেমোক্র্যাটরা বিচার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। ডেমোক্র্যাটরা দাবি করেছেন, হামলার দিন এবং এর আগে তিনি নিজেই ‘প্রধান উসকানিদাতা’ হিসেবে কাজ করেছেন। বিচারের সময় আবেগঘন বিবৃতিতে অভিশংসনের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা সহিংস ঘটনার খুঁটিনাটি তুলে ধরেন।  নিরাপত্তা ফুটেজে দেখা যায় দাঙ্গাকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কতটা কাছাকাছি চলে এসেছিল। ভিতরে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা মরিয়া হয়ে রাজনীতিবিদদের নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছিলেন। অনেক সময় মাত্র কয়েক গজের ব্যবধানে দাঙ্গাকারীরা ভবনের চেম্বারে প্রবেশ করছিল। সেদিন মিথ্যা অভিযোগের সমর্থনে হাজার হাজার মানুষ জড়ো করে ট্রাম্প। এ অবস্থাকে ‘সবাইকে মৃত্যুর মুখে’ ফেলে দেওয়া হিসেবে তুলনা করছেন। চলতি সপ্তাহের শেষে ট্রাম্পের আইনজীবী তাঁর পক্ষে বিচারে যুক্তি তুলে ধরবেন। তবে এরই মধ্যে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে বিচার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত এবং অসাংবিধানিক। ১০০ আসনের সিনেটে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দরকার। তবে এখনো পর্যন্ত সিনেটের রিপাবলিকান সদস্যরা ট্রাম্পের প্রতি অনুগত থাকার কারণে তিনি রেহাই পেয়ে যাবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

প্রথম দিন কী হলো : বিচার প্রক্রিয়ার সাংবিধানিক বৈধতার বিষয়ে মঙ্গলবার প্রক্রিয়াগত ভোটের পর সিনেটররা প্রথম দিনের বিচারে বসেন। যেখানে উভয় পক্ষকে ১৬ ঘণ্টা করে সময় দেওয়া হয় নিজেদের পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য। প্রধান প্রসিকিউশন ম্যানেজার জেমি রাসকিন বলেন, ‘গত মাসের সহিংসতায় ট্রাম্প কোনো “নিরপরাধ দর্শক” ছিলেন না কারণ তিনি এর জন্য কয়েক মাস ধরে তাদের প্রশংসা করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন এবং তা তৈরি করেছেন।’ ট্রাম্পের সমর্থক ওয়েবসাইটগুলোর স্ক্রিনশট প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপিত করা হয়েছে। সেখানে দেখানো হয়েছে তাঁর সমর্থক ঘাঁটিতে থাকা চরমপন্থিরা ট্রাম্পের বক্তব্য থেকে হামলার পূর্বপরিকল্পনা করতে উৎসাহিত করেছে এবং আইনপ্রণেতাদের ওপর সহিংস হওয়ার ইচ্ছার বিষয়ে খোলাখুলিই কথা বলেছে। এর আগে অপ্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায় দাঙ্গাকারীরা কীভাবে শরীরে বর্ম পরে সহিংসভাবে ভবনে প্রবেশ করেছিল। সে সময় যারা নির্বাচনের ফল অনুমোদনে কাজ করছিলেন তাদের খুঁজছিল। একটি ক্লিপে দেখা যায় এক নিরাপত্তারক্ষী রিপাবলিকান সিনেটর ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মিট রমনিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আরেক ভিডিওতে দেখা যায় ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কারণ নির্বাচনের ফল অনুমোদনে আপত্তি না তোলায় ভিড়ের মধ্যে থাকা অনেকেই তাঁর ‘ফাঁসি’ দাবি করছিল। আরেক ভিডিওতে দেখা যায় ন্যান্সি পেলোসির কর্মীরা লুকিয়ে গুঞ্জন করছেন, কারণ দাঙ্গাকারীরা হাউস স্পিকারের খোঁজে তাঁর অফিসে ঢুকে পড়ে এবং বলতে থাকে ‘আপনি কোথায় ন্যান্সি পেলোসি’।

সর্বশেষ খবর