শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

ভারত-পাকিস্তান গোপন বৈঠক

ভারত-পাকিস্তান গোপন বৈঠক

জন্মের পর থেকে বৈরী সম্পর্ক। যুদ্ধ হয়েছে একাধিকবার। এই দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান। দুই দেশই এখন পারমাণবিক শক্তিধর। মাঝে মাঝে সম্পর্কের একটু ইতিবাচক ধারা দেখা দিলেও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য তা ভেস্তে যায়। সর্বশেষ জম্মু-কাশ্মীর সমস্যাকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের সম্পর্ক নাজুক অবস্থায় ঠেকেছে। তবে এরমধ্যে তাদের সম্পর্কের বরফ গলানোর চেষ্টার গোপন বৈঠকের খবর চাউর হয়েছে। আর এই গোপন বৈঠকের ধারা শুরু হয়েছে চলতি মাসের শুরু থেকেই। সর্বশেষ তথ্য হলো, জানুয়ারিতে দুবাইয়ে গোপন বৈঠক করেছেন পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে জানেন এমন সূত্র নয়াদিল্লিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে। সূত্রটি জানিয়েছে, কাশ্মীরকে ঘিরে যে সামরিক উত্তেজনা তা শান্ত করার নতুন প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে। কিন্তু বিষয়টিকে সহজভাবে নেয়নি পাকিস্তান। সেই থেকে দুই দেশের সম্পর্কের বরফ আরও কঠিন হয়েছে। বন্ধ হয়ে যায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও। ভারতের কাশ্মীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক লবিংয়ের চেষ্টা করে পাকিস্তান। কিন্তু উভয় দেশের সরকার এই অবস্থার অবসানের চেষ্টা করছে। তারা কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে নতুন করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য ব্যাক চ্যানেলে বা পর্দার আড়ালে কাজ করে যাচ্ছে। দুই দেশই কাশ্মীরকে নিজেদের দেশ দাবি করে। দুবাইয়ের বৈঠক সম্পর্কে জানেন এমন দুজন বলেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের মধ্যস্থতায় ভারতের বৈদেশিক বিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্স অ্যান্ড এনালাইসিস উইংয়ের (র) এবং পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) কর্মকর্তারা গিয়েছিলেন দুবাইয়ে। সেখানে তাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিষয়ক শীর্ষ বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, তিনি মনে করেন কয়েক মাস ধরেই তৃতীয় কোনো দেশে গোপনে বৈঠক করে যাচ্ছেন ভারত ও পাকিস্তানের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। আমার মনে হয় তারা এমন বৈঠক করেছেন থাইল্যান্ডে, দুবাইতে অথবা লন্ডনে।

তবে এমন বৈঠক এর আগেও হয়েছে। বিশেষ করে যখন কোনো সঙ্কট সৃষ্টি হয় তখন এমন বৈঠক হয়। এ নিয়ে প্রকাশ্যে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয় না। দিল্লি থেকে একটি সূত্র বলেছে, এখনো অনেক বিষয় আছে, যা ভুলপথে যেতে পারে। এটা একটা ভুল বিষয়। এ জন্য কোনো পক্ষই এ বিষয়গুলোকে প্রকাশ্যে স্বীকার করে না। এমনকি আমরা জানতেও পারি না ওই বৈঠকে কে কে অংশ নিয়েছিলেন। গত বছর চীনের সঙ্গে সীমান্তে এক অচলাবস্থায় পৌঁছে ভারত। অন্যদিকে চীনের মিত্র পাকিস্তান অর্থনৈতিক সংকট এবং আইএমএফের বেইলআউট কর্মসূচিতে জড়িত পাকিস্তান। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ অবস্থায় কাশ্মীর সীমান্তে উত্তেজনা দীর্ঘ সময় ধরে রাখার সামর্থ্য নেই পাকিস্তানের। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে তাদের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে আফগানিস্তান সীমান্ত স্থিতিশীল রাখতে হবে পাকিস্তানকে। এজন্য সেখানে সৈন্য পাঠানো দরকার।

জানা গেছে, জানুয়ারিতে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে গোপন বৈঠকের পর তারা ঘোষণা দিয়েছে কাশ্মীরকে বিভক্তকারী নিয়ন্ত্রণ রেখায় তারা হত্যা বন্ধ করবে।

সর্বশেষ খবর