সোমবার, ৩ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
মিয়ানমার পরিস্থিতি

সেনা শাসনে বিভেদ ঘুচিয়ে এক হচ্ছে জাতি গোষ্ঠীগুলো

একের পর এক ‘রহস্যময় বিস্ফোরণ’

সেনা শাসনে বিভেদ ঘুচিয়ে এক হচ্ছে জাতি গোষ্ঠীগুলো

মিয়ানমারে গতকাল হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। আয়োজকেরা বলছেন, বিশ্বকে নাড়া দিতেই মিয়ানমারের জনগণ প্রতিবাদী কণ্ঠ তুলেছেন। এদিকে মিয়ানমারে একের পর এক ‘রহস্যময় বিস্ফোরণ’ ঘটছে।

১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান সবচেয়ে বড় কর্মসূচি সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী বার্মিজদের গণবিক্ষোভ বেসামরিক প্রশাসনের অসহযোগ ও শ্রমিক ধর্মঘট এমনকি একটি সশস্ত্র সংগ্রামের সূচনা হওয়ার সম্ভাবনার পথও তৈরি করে দেয়। কিন্তু চুপিসারে অন্য এক পরিবর্তনও ঘটে চলেছে। নৃগোষ্ঠীগত বৈচিত্র্যময় একটি মিয়ানমারের গ্রহণযোগ্যতা ক্রমেই বাড়ছে, যা আগের যে কোনো রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে ছিল অনুপস্থিত। আর নতুন এই পরিবর্তনের স্রোতের গতিপথ অনুসরণের চেষ্টা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। এক প্রতিবেদনে তার ভিত্তিতে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে পত্রিকাটি। এতে বলা হয়, কীভাবে ‘তাতমাদো’র (স্থানীয় ভাষায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী) বিরুদ্ধে লড়তে হবে, সে বিষয়ে এসব সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর রয়েছে গভীর দূরদৃষ্টি। সশস্ত্র বাহিনী যখন জনগণের রক্ষকের পরিবর্তে দখলদার বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ, তখন মিয়ানমার কতটা স্থিতিশীল হতে পারে, তা সংখ্যাগুরু বামারদের চেয়ে তারা ভালো জানেন বলে দাবি করছেন।

সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়ন বেড়ে চলার মধ্যে অনেকেই উপলব্ধি করতে শুরু করেছেন, যে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী, যারা দশকের পর দশক নির্যাতনের শিকার, তাদের স্বীকৃতি দেওয়া ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব না। মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী, যারা দেশের প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ সীমান্ত এলাকাগুলোজুড়ে ছড়িয়ে আছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম বিশ্বে দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা গৃহযুদ্ধগুলোর অন্যতম। এদিকে গতকাল একটি কর্মসূচিতে সেনা বিরোধী নেতারা বলছেন, তাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় করে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের আয়োজন করেছেন। মিয়ানমারের জনগণের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর দিয়ে বিশ্বকে নাড়া দিতেই তাঁদের এই আয়োজন। এদিকে মিয়ানমারের বিভিন্ন স্থানে ‘রহস্যময়’ বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। কে বা কারা এই বিস্ফোরণগুলো ঘটাচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। বিস্ফোরণগুলোর দায় এখন পর্যন্ত কেউ নেয়নি।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের গতকাল শনিবারের সন্ধ্যার প্রধান বুলেটিনে বলা হয়, আগের ৩৬ ঘণ্টায় দেশটির বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১১টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ বিস্ফোরণই ঘটেছে প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনে। বিস্ফোরণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের তথ্য নেই।

সর্বশেষ খবর