মঙ্গলবার, ১১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

২০১৫ সালেই করোনাকে জীবাণু অস্ত্র বানাতে চেয়েছিল চীন

ডকুমেন্ট ফাঁস

২০১৫ সালেই করোনাকে জীবাণু অস্ত্র বানাতে চেয়েছিল চীন

করোনাভাইরাস কী জিনিস তা অনেক আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন চীনা বিজ্ঞানীরা। তাই তো এই ভাইরাসকে জীবাণু অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। আর সেটা ২০১৫ সালেই। ভারতের অনলাইন এনডিটিভিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘দ্য আন-ন্যাচারাল অরিজিন অব সার্স অ্যান্ড নিউ স্পেসিস অব ম্যান-মেড ভাইরাসেস অ্যাজ জেনেটিক বায়োউইপনস’ শীর্ষক এক ডকুমেন্টে বলা হয়েছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে এই জীবাণু অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করা যাবে। ওই ডকুমেন্টটি ২০১৫ সালে লিখেছেন চীনের বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। চীন বিশ্বে সব ক্ষেত্রে প্রভাব খাটাতে মরিয়া। এর অংশ হিসেবেই দেশটির বিজ্ঞানীরা সার্স ভাইরাসকে কাজে লাগাতে চান। এ জন্য তারা সার্স করোনাভাইরাস নতুন জেনেটিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের গবেষণা করছেন। যাকে কৃত্রিমভাবে মানবরোগের ভাইরাস হিসেবে আবির্ভাব করাতে গবেষণা করে। তারপর তাকে জীবাণু অস্ত্র হিসেবে অবমুক্ত করান কৌশল রপ্ত করে। অস্ট্রেলিয়ার উইকলি অস্ট্রেলিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে এসব কথা লিখেছে এনডিটিভি। এতে দেখা যায়, কভিড-১৯ মহামারী শুরুর ৫ বছর আগে সার্স করোনাভাইরাসকে জীবাণু অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন চীনের সামরিক বাহিনীর বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে উইকলি অস্ট্রেলিয়ানের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে নিউজ ডটকম এইউ-এই সাইটে। এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট (এএসপিআই)-এর নির্বাহী পরিচালক পিটার জেনিংস বলেছেন, আমরা যা পেয়েছি এই ডকুমেন্ট থেকে তা বন্দুকের গুলি ছুড়ে দেওয়ার সময় যে ধোঁয়া বের হয় তারই মতো। আমি মনে করি এটা খুব উল্লেখযোগ্য বিষয়। কারণ এ ডকুমেন্ট খুব পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দেয়, করোনাভাইরাসের বিভিন্ন স্ট্রেইনের সামরিক ব্যবহারের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছিলেন চীনা বিজ্ঞানীরা। তারা চিন্তাভাবনা করছিলেন এই করোনাভাইরাসের স্ট্রেইনকে কীভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। আমরা এখন যে অবস্থায় আছি, এটা হতে পারে সামরিক ব্যবহারের প্যাথোজেন (করোনাভাইরাস) দুর্ঘটনাক্রমে অবমুক্ত হয়ে থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, এই ডকুমেন্টই বলে দেয় কেন কভিড-১৯ নিয়ে বাইরের দেশগুলোর তদন্তের ক্ষেত্রে চীন এত অনীহা প্রকাশ করে। যদি চীনের সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ত তাহলে নিজেদের স্বার্থেই তদন্তে সহযোগিতা করার কথা ছিল চীনের। কিন্তু আমরা চীনকে দেখতে পাচ্ছি বিপরীত অবস্থানে। সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ রবার্ট পটার চীন সরকারের ফাঁস হওয়া ডকুমেন্ট বিশ্লেষণ করেছেন। তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন দ্য অস্ট্রেলিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক। জবাবে রবার্ট পটার বলেছেন, এই ডকুমেন্টটি কোনোভাবেই ভুয়া হতে পারে না। আমরা উচ্চ পর্যায়ে আস্থায় পৌঁছেছি যে, এটা প্রকৃত ডকুমেন্ট। এটা ভুয়া নয়। কিন্তু এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে অন্যদের। পটার আরও বলেন, চীন সরকার যে এই গবেষণাকে আরও সামনে এগিয়ে নেয়নি বা নিতে চায়নি তা এই ডকুমেন্ট বলে না। রবার্ট পটার বলেন, এই ডকুমেন্ট চমৎকার মজার একটি বিষয়। এটা বলে দেয় চীনের বৈজ্ঞানিক গবেষকরা কী চিন্তাভাবনা করছেন। উল্লেখ্য, সার্স-কোভ-২ নামের করোনাভাইরাস সারা বিশ্বে কভিড-১৯ মহামারী সৃষ্টি করেছে। এর উৎপত্তি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে। করোনাভাইরাস ভাইরাসের বিশাল একটি পরিবার। এর মধ্যে আছে নানা রকম স্ট্রেইন। এর মধ্যে কিছু স্ট্রেইন মানবদেহে শ্বাস-প্রশ্বাসে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি করে। এর মধ্যে সাধারণ ঠান্ডা থেকে শুরু করে সেভার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) পর্যন্ত সংক্রমণ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর