ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে জেরুজালেমের কিছু অংশ দখল করে নেওয়ার বার্ষিকী ‘জেরুজালেম দিবস’। এই দিবস পালন কালে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে গতকাল ভোরে ফের ইসরায়েলি বাহিনী ঢুকে পড়েছে। সেখানে তারা ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও বোমা ছুড়েছে। এতে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এর আগে শুক্রবার থেকে সেখানে কয়েক দফায় ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ হয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকা থেকে শ খানেক ফিলিস্তিনি পরিবার উচ্ছেদের ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তা নিয়েই সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা শুরু হয়। ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের একটি সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই পরিবারগুলোকে উচ্ছেদের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন ইসরায়েলি আদালত। এর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টে আপিল শুনানিকে সামনে রেখে দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে রবিবার ওই মামলার শুনানি পিছিয়ে গেছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নতুন তারিখ দেওয়া হবে। আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত। তবে এটি ইহুদিদের কাছেও একটি পবিত্র স্থান, যাকে তারা টেম্পল মাউন্ট হিসেবে জানেন। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ২১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ১৫৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আল আকসার প্লাজায় তাদের দিকে পাথর নিক্ষেপরত কয়েকশত ফিলিস্তিনিকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, শব্দ বোমা ও রবার বুলেট ছুড়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ওফির গেনডেলমান এক টুইটে বলেছেন, ‘টেম্পল মাউন্টে সহিংসতা করার জন্য উগ্রপন্থি ফিলিস্তিনিরা আগে থেকেই ভালো পরিকল্পনা করে রেখেছিল। আমরা এখন যা দেখছি তা তারই ফলাফল।’ পুলিশ জানিয়েছে, শান্তি রক্ষার্থে তারা জেরুজালেমের সড়কগুলো ও বিভিন্ন ছাদে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছে। জেরুজালেমের দখল করা পূর্ব অংশ ইসরায়েল নিজেদের ভূখন্ডের অংশ করে নিলেও তাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সায় মেলেনি, তারপরও পুরো জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী হিসেবে দেখে ইসরায়েল। অপরদিকে ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখ- নিয়ে যে রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন দেখে তার রাজধানী করতে চায় পূর্ব জেরুজালেমকে।