মঙ্গলবার, ১১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

হিমন্তই কেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী

হিমন্তই কেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী

হিমন্ত বিশ্বশর্মা দীর্ঘদিন বিজেপির বিরোধী শিবির কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলেন। দলটির কর্মী থেকে নেতা ও এমএলএ হয়েছিলেন তিনি। ২০০১, ২০০৬ ও ২০১১ পরপর তিনবার তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে আসাম বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন এবং মন্ত্রী হিসেবে নানা দফতর সামলেছেন। তাঁর দ্রুত উত্থান কংগ্রেসের ভিতরে হিমন্তকে মুখ্যমন্ত্রীর দাবিদার করে তোলে, তাঁর সঙ্গে সমস্যা শুরু হয় সে সময়ের মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত তরুণ গগৈয়ের। ছয় বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী হতে না পেরেই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। পাঁচ বছর আগেই বিজেপি জেতার পর তিনি আবার মুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন সর্বানন্দ সোনোয়ালকে মুখ্যমন্ত্রী করেন মোদি-শাহ। সর্বানন্দও আসাম গণ-পরিষদ বা অগপ থেকে এসেছিলেন। সেসময় বিজেপির কোনো মুখ না থাকায় তাঁকেই বিজেপি সভাপতি করা হয়েছিল। কিন্তু হিমন্ত আসার পর পরিস্থিতি অনেকটা বদলে যায়। শুধু আসাম নয়, তার সঙ্গে উত্তর পূর্বের আরও চারটি রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখানেও সাফল্য পান হিমন্ত। এবার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সর্বানন্দ নন, বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন হিমন্ত। অসমীয় প্রতিদিনের প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডিডব্লিউকে জানিয়েছেন, ‘সর্বানন্দ যত সুপারিশ করেছিলেন, তার প্রায় কোনোটাই মানা হয়নি। কিন্তু হিমন্ত বিশ্বশর্মার ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো হয়েছে। তার অধিকাংশ সুপারিশই মানা হয়েছে। বিধায়কদের মধ্যে ৪২ জন হিমন্তের অনুগামী।’ যে যুক্তিটা এক বিজেপি নেতা তার ঘনিষ্ঠমহলে দিয়েছেন, তা হলো- তাদের ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথাটা মাথায় রাখতে হচ্ছে। হিমন্তকে বেছে নেওয়া মানে শুধু আসাম নয়, উত্তর পূর্বের অনেক রাজ্যে বিজেপি প্রার্থীদের জয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাওয়া। প্রবীণ সাংবাদিক ও উত্তর পূর্ব ভারত বিশেষজ্ঞ জয়ন্ত ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘এই প্রথম একজন অহোমকে বাদ দিয়ে ব্রাহ্মণকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বেছে নিল বিজেপি। খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, তিনি এখন কতটা ক্ষমতাবান ও কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের কাছে অপরিহার্য নেতা।’ প্রশাসক ও রাজনীতিক হিসেবে হিমন্তের বড় গুণ কী? আশিসের মতে, ‘হিমন্তের সাহস, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দুটোই তার বড় গুণ। প্রশাসক হিসেবে এবং সংগঠক হিসেবে তিনি নিঃসন্দেহে সর্বানন্দের থেকে অনেক বেশি কার্যকর।’ 

জয়ন্তও মনে করেন, হিমন্তের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। উত্তর পূর্বের জন্য হিমন্তকে এতদিন খোলা হাতে কাজ করতে দিয়েছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তার হাতে দায়িত্ব দিয়ে অনেকটাই নিশ্চিন্তে তারা। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তারা কোনো ঝুঁকি নিতে চাননি। সে জন্যই হিমন্তের আশাপূরণ হলো। তিনি আসামে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে পারলেন।

সর্বশেষ খবর