শুক্রবার, ৪ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ইসরায়েলে সরকার গড়ল বিরোধী জোট, নেতানিয়াহুর বিদায়

ইসরায়েলে সরকার গড়ল বিরোধী জোট, নেতানিয়াহুর বিদায়

গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার কৃতিত্ব নিলেও দেশে রাজনৈতিক মঞ্চে পর্যুদস্ত হলেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা কোনো কাজে এলো না। দেশের মানুষের সমর্থন পেলেন না। কারণ ইতিমধ্যে ইসরায়েলে সরকার গঠনের দাবি পেশ করেছে বিরোধী জোট। সেখানে ৮টি দল মিলে একটি কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। বুধবার নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার মাত্র আধঘণ্টা আগে প্রেসিডেন্ট রুবেন রিভলিনের কাছে সরকার গড়ার দাবি পেশ করেন বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিড। ফলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিদায় সময়ের অপেক্ষা মাত্র।  চুক্তি অনুযায়ী ডানপন্থি দল ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেট শুরুতে প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর তিনি ইয়ার লাপিডের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। চুক্তি অনুযায়ী বেনেট প্রথম দুই বছর প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। এরপর ওই পদে বসবেন লাপিড।  রয়টার্স জানায়, সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এবং বেনজির বিষয় হচ্ছে যে জোট সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে ইসরায়েলে সংখ্যালঘু আরবদের দল ‘ইউনাইটেড আরব লিস্ট’। এ ছাড়া এই জোটে থাকছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানতজের দল ‘বু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি’। সব মিলিয়ে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট ‘নেসেট’-এ সংখ্যগরিষ্ঠতার দাবি পেশ করেছে বিরোধী ‘মহাজোট’।

ইসরায়েলের গণমাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে ইয়ার লাপিড, নাফতালি বেনেট এবং ইসলামপন্থি রাম পার্টির নেতা মানসুর আব্বাস একটি চুক্তি স্বাক্ষর করছেন। এমন চুক্তিকে অনেকেই অসম্ভব মনে করেছিলেন। মানসুর আব্বাস সাংবাদিকদের বলেছেন যে সিদ্ধান্তটি খুবই কঠিন ছিল। ‘বেশ কিছু মতবিভেদ হয়েছে, কিন্তু একটা সমঝোতায় পৌঁছানো খুবই জরুরি ছিল।’ প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিনকে ইয়ার লাপিড জানিয়েছেন যে বেনেট এবং তিনি নিজে এক সঙ্গে সরকার পরিচালনা করবেন। এদিকে, বিরোধী জোটের স্থায়িত্ব নিয়ে রীতিমতো সন্দিহান রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, বেনেটের ‘ইয়ামিনা পার্টি’ হচ্ছে ঘোর দক্ষিণপন্থি। অধিকৃত প্যালেস্টাইনে ইহুদি বসতি গড়ে তোলার পক্ষে বেনেট। কিন্তু বরাবর এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন লাপিড। এ ছাড়া, আরব দলের রাজনৈতিক সমর্থন পেলেও রক্ষণশীল ইহুদি লবির চাপে ওয়েস্ট ব্যাংক বা জেরুজালেম নিয়েও নীতিতে বিশেষ কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না নয়া জোট সরকার। ফলে নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করা ছাড়া এই জোটের ‘ন্যূনতম সাধারণ কর্মসূচি’ বলতে তেমন কিছু নেই।

উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে চতুর্থবার নির্বাচনের পর একক দল হিসেবে সর্বাধিক আসন লাভ করে ‘লিকুদ পার্টি’। সেমতো নেতানিয়াহুকে সরকার গড়ার আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট রুবেন রিভলিন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হন তিনি। তারপর বিরোধী জোটকে সরকার গঠনে গত বুধবার পর্যন্ত সময় দেন প্রেসিডেন্ট। এ ডামাডোলে ইয়ার লাপিডকে সমর্থন দেওয়ার কথা ঘোষণা করে নেতানিয়াহুর সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছেন বেনেট বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 

এদিকে প্রেসিডেন্ট রিভলিন দ্রুত আস্থা ভোট আয়োজনের জন্য পার্লামেন্টের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তবে পার্লামেন্টে এই কোয়ালিশন যদি সমর্থন না পায়, তাহলে ইসরায়েলে দুই বছরের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন আয়োজনের দরকার হতে পারে।

সর্বশেষ খবর