মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রকৃতির বিনাশে সৃষ্টি মহামারী

প্রকৃতির বিনাশে সৃষ্টি মহামারী

একদল বলছে প্রকৃতিকে বিরক্ত করবেন না। প্রকৃতি একবার বিরাগভাজন হলে কুলোতে পারবেন না। আরেক দল সেই আহ্‌বান উপক্ষো করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকৃতির সঙ্গে যাচ্ছেতাই করছে। ফলাফলে প্রকৃতি সত্যিই বিরাগভাজন হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে মহামারী। বিজ্ঞানীরা তাই আবার সতর্ক করেছেন। তাঁরা বলছেন, বিশ্বের যারা নেতৃত্বে আছেন তারা যদি শিগগিরই মহামারী রোধে ব্যবস্থা না নেন তাহলে পৃথিবীর সব মানুষ ও প্রাণীকে এর খেসারত দিতে হবে। দ্য গার্ডিয়ানের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকরা বলছেন, বনাঞ্চল নষ্ট করে ও বন্যপ্রাণী শিকার ও ভক্ষণ করার ফলে প্রাণী ও তাদের বহন করা জীবাণু ক্রমাগত মানুষ ও গবাদি পশুর সংস্পর্শে চলে আসছে। আর এতে নতুন নতুন জীবাণুর সৃষ্টি হচ্ছে এবং নতুন সংক্রামক রোগের প্রায় ৭০ শতাংশ বিভিন্ন প্রাণী থেকে উৎপত্তি হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে কভিড-১৯, সার্স, বার্ড ফ্লু, ইবোলা, এইচআইভি প্রভৃতি।

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিভেনটিং প্যানডেমিকস অ্যাট দ্য সোর্সের (পিপিএস) গঠন করা আন্তর্জাতিক গবেষকদের নতুন একটি স্বতন্ত্র টাস্কফোর্স মহামারী মোকাবিলায় উৎস চিহ্নিত করতে কাজ করছে। সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা বলছেন, মহামারীর মূল কারণ প্রতিরোধের বিষয়গুলো বিশ্বনেতা ও কর্তৃপক্ষ খুব কমই উল্লেখ করেন। পিপিএসের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্বস্বাস্থ্য সম্মেলন (ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি) ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার করোনা মহামারীর প্রতিবেদনেও বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে।

নতুন এ টাস্কফোর্সে বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চল থেকেই বিজ্ঞানীদের রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এ টাস্কফোর্স তৈরি করেছে। গ্রীষ্মের শেষ নাগাদ এ টাস্কফোর্স মহামারী রোধে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে।

টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে থাকা অ্যারন বার্নস্টেইন বলেছেন, ‘কভিড-১৯ আমাদের জন্য একটি উদাহরণ। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিশ্বনেতারা এর মর্ম থেকে দূরে রয়েছেন। ফলে তারা পদক্ষেপ নেওয়া থেকেও দূরে রয়েছেন।’ অ্যারন বার্নস্টেইন আরও বলেছেন, ‘বর্তমানে বিশ্বনেতারা যেসব কথা বলেন তার বেশির ভাগই স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তুতি, রক্ষণাবেক্ষণ ও টিকাসংক্রান্ত। কিন্তু এগুলো হচ্ছে রোগ ছড়ানোর পর তা প্রতিরোধের উপায়। কিন্তু আমরা এটা শিখেছি যে মুক্তির পথ আরও সাশ্রয়ী হতে পারে। মহামারী উৎপত্তির পর তা ব্যবস্থাপনার চেয়ে মহামারী শুরুতেই প্রতিরোধের ব্যয় খুব সামান্য। এসব পদক্ষেপের অধিকাংশই আবার জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্য সংকটের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে কাজে লাগে।’

সর্বশেষ খবর