বিশ্বজুড়ে সক্রিয় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীর ৮ শতাধিক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বিভিন্ন দেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। অপরাধীদের ব্যবহার করা একটি অ্যাপে আড়ি পেতে অন্তত ১৮টি দেশের এই অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ান ও ইউরোপীয় পুলিশ আর যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) এক অভিযানে এদের গ্রেফতার করার পাশাপাশি নগদ ১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং বিপুল পরিমাণ মাদকও জব্দ করা হয়েছে। মূলত সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত অ্যাপটি হ্যাক করে লাখ লাখ এনক্রিপ্টেড মেসেজ উদ্ধার করেছে বৈশ্বিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। এনক্রিপ্টেড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চালানো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ধ্বংস করার এমন ঘটনা খুব বেশি নেই। মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই এ অভিযানের নাম দেয় অপারেশন ট্রোজান শিল্ড। অস্ট্রেলিয়ান পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তারা ২০১৮ সালেই এ অভিযানের পরিকল্পনা করে। অভিযানের পর অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বজুড়ে সংঘবদ্ধ অপরাধীদের ওপর বড় ধরনের আঘাত এই অভিযান।
অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ কমিশনার রিস কারশ জানান, অভিযানে কেবল তার দেশ থেকেই ২২৪ জনকে গেফতার করা হয়েছে, এদের মধ্যে বেআইনি ঘোষিত মোটরসাইকেল গ্যাংয়ের সদস্যরাও আছেন। নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে তারাও ৩৫ জনকে আটক করেছে। ইউরোপের মধ্যে সুইডেন ও জার্মানি থেকে ১৩৫ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নেদারল্যান্ডসে গ্রেফতার হয়েছে ৪৯ জন। বিবিসি জানিয়েছে, অপরাধীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অ্যাপটি অ্যানম নামে এফবিআই পরিচালিত একটি এনক্রিপ্টেড ডিভাইস কোম্পানি বানিয়েছিল। এফবিআই পরে গোপনে তাদের চরদের মাধ্যমে আন্ডারওয়ার্ল্ডের অপরাধীদের কাছে ওই অ্যাপসহ ডিভাইস সরবরাহ করে। অ্যাপটি দ্রুতই অপরাধীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। শতাধিক দেশের ৩০০টিরও বেশি অপরাধী চক্র অ্যাপ সংবলিত প্রায় ১২ হাজার ডিভাইস ব্যবহার করে। অ্যাপটির ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকায় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মাদক বেচাকেনা, সহিংসতা, খুনসহ সম্ভাব্য নানা অপরাধ ও অপরাধের পরিকল্পনার কথা জানতে পারে। বিশ্বজুড়ে ৯ হাজার পুলিশ এই অভিযানে সম্পৃক্ত ছিল।
