শিরোনাম
বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

জান্তার আদালতে সু চির ১৫ বছরের সাজা তৈরি!

মিয়ানমারজুড়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক। বন্দুকের নলের মুখে চলছে গণতন্ত্রের অন্তিমযাত্রা। এর মধ্যে চলছে লোকদেখানো বিচার। সেখানে আসামি দেশটির গণতন্ত্রের নেত্রী অং সান সু চি। অভ্যুত্থানের পর অপসারিত সরকারের সর্বোচ্চ নেত্রী সু চি কোথায় আছেন তা জান্তা ছাড়া জানে না কেউ। এমনকি দেশটির রাজনৈতিক নেতারাও। রয়টার্স, বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক সব সংবাদমাধ্যমের খবর- মিয়ানমারের সামরিক সরকার পূর্ব ঘোষণামতো সু চির বিচার শুরু করেছে। বিচারের ফল কী হবে? সামরিক সরকারের ইঙ্গিত অন্তত ১৫ বছরের জন্য জেলে পাঠানো হতে পারে সু চিকে। বিবিসি জানাচ্ছে, ৭৫ বছরের সু চি এখন বর্মী সেনার মেশিনগানের মুখে অসহায়। যদিও তাঁর মুক্তির দাবিতে বিশ্বজোড়া জনমত সংগঠিত হচ্ছে। জাতিসংঘসহ প্রায় সব দেশ চাইছে সু চি যেন নিরাপদে থাকেন। ইতিহাসের এ এক আশ্চর্য পরিহাস। দেশেরই জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর দমননীতি ও গণহত্যার নীরব সমর্থন করেছিলেন সু চি। বিশ্বজুডে ‘ধিকৃত’ হন তিনি। তাঁর নোবেল কেড়ে নেওয়ার জনমত সংগঠিত হয়েছিল। সেনাকে সমর্থন জানানো সেই সু চি এখন বন্দী। চার মাস আগে ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে ঘটে রক্তপাতহীন সেনা অভ্যুত্থান। জাতীয় নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সু চি ও তাঁর দল এনএলডি পুনরায় সরকার গড়েছিল। সেই সরকার শপথ নেওয়ার আগেই বর্মী সেনা দখল করে নেয় ক্ষমতা। সেনাপ্রধান মিং অন লাইংয়ের নেতৃত্বে মিয়ানমার ফের সামরিক জমানায় প্রবেশ করে। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই ইয়াঙ্গুন শহরের বাসভবনে বন্দী ছিলেন সু চি। তাঁর সমর্থনে শুরু হয় গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন। পরিস্থিতি বুঝে সু চিসহ অপসারিত সরকারের মন্ত্রীদের গোপন স্থানে বন্দী করে রাখে সেনা। সেই গোপন আস্তানা থেকেই বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন সু চি। বর্মী সেনার তরফে জানানো হয়েছে, যাবতীয় আইনি সুবিধা পাবেন সু চি। কিন্তু তাকে কোনো আইনজীবীই দেওয়া হয়নি।

কী অভিযোগ মিয়ানমারের কিংবদন্তি ‘গণতন্ত্রপ্রেমী’ নেত্রী সু চির বিরুদ্ধে? জান্তা সরকারের অভিযোগ, নিবন্ধনহীন ওয়াকিটকি ব্যবহার করে বিদেশে কথা বলা, কভিড দূরত্ববিধি না মেনে জনসভা, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা কমানোর চেষ্টা ও গোষ্ঠী সংঘর্ষের উসকানি দেওয়া। অন্যদিকে এনএলডি দলের দাবি, সু চিসহ বাকিদের বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগ আনা হয়েছে।

নির্বাচনে ভরাডুবি হয় সেনাসমর্থিত দলের। সে কারণে প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন সেনাপ্রধান মিং অন লাইং। এদিকে সু চির মুক্তি ও গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে মিয়ানমারজুড়ে চলছে গণআন্দোলন। সে আন্দোলন দমাতে সেনাবাহিনির বিরুদ্ধে গণহত্যার একের পর এক অভিযোগ আসছে।

সর্বশেষ খবর