বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বাইডেন-পুতিন তিন ঘণ্টা বৈঠকে নানা প্রসঙ্গ

বাইডেন-পুতিন তিন ঘণ্টা বৈঠকে নানা প্রসঙ্গ

জেনেভার ভিলা লা গ্রানজ হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (বামে) ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন -এএফপি

গোটা বিশ্ব তাকিয়ে ছিল। যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার দীর্ঘ উত্তেজনার মধ্যেই দুই দেশের প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ হল। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা আলোচনাও হল। গতকাল জেনেভার  স্থানীয় সময় বেলা ১টায় বাইডেন ও পুতিনের মধ্যে চলে ওই বৈঠক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পুতিনের সঙ্গে বাইডেনের এটা ছিল প্রথম মুখোমুখি বৈঠক।

গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, বাইডেন ও পুতিন বৈঠকে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেন। এসব ইস্যুর মধ্যে ছিল-যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, সাইবার হামলা, মানবাধিকার, ইউক্রেন, বেলারুশ, কৌশলগত স্থিতিশীলতা, আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, করোনা মহামারী, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি। সম্মেলন আয়োজক সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট গাই-পারমেলিন সম্মেলনের সূচনা করার পর বাইডেন-পুতিন হাত মেলান। বাইডেনের পাশে বসে পুতিন বলেন, মিস্টার প্রেসিডেন্ট, সাক্ষাতের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার সম্পর্কে অসংখ্য বিষয় জমে আছে যেগুলো আলোচনা করতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বৈঠক   প্রয়োজন। বৈঠক শেষে দুই নেতাই সাংবাদিকদের বলেন, সংলাপ গঠনমূলক ছিল।

তবে বৈঠক সূত্রে জানা যায়, মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে বাইডেন রাশিয়ার সমালোচনা করলে পুতিন উল্টো যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুক সহিংসতা এবং ড্রোন আক্রমণের সমালোচনা করেন। পুতিন তার স্বভাবজাত পাল্টা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে যুক্তি দিয়ে বলেন, মানবাধিকার সম্মানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জবাবদিহিতার অনেক কিছু আছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি গুয়ান্তানামো-বে কারাগারের কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই কারাগারে বন্দিদের অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভøাদিমির পুতিন কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরুর অংশ হিসেবে উভয় দেশের রাষ্ট্রদূতের কাজে ফেরার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজের পর দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরা নিজ নিজ দেশে অবস্থান করছেন।

 বৈঠক শেষে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, দু’পক্ষ সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছেন।

ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছে, সংঘবদ্ধ রুশ সাইবার মাফিয়ারা গোটা বিশ্বে ক্রাইম করছে। এমন কী মার্কিন নির্বাচনেও হস্তক্ষেপ করেছে। মার্কিন অভিযোগ, এটি রাশিয়ান সুরক্ষা পরিষেবা বা ক্রেমলিনের সঙ্গে লিঙ্কযুক্ত হ্যাকারা এটা পরিচালনা করছে। পুতিন জানান, আমেরিকা রাশিয়ার কাছ থেকে পৃথকভাবে ১০টি পৃথক সাইবার নিরাপত্তার ঘটনার তথ্য চেয়েছিল এবং ওয়াশিংটন সব ক্ষেত্রেই ‘সম্পূর্ণ’ উত্তর পেয়েছে।

পুতিন অভিযোগ করেন, রাশিয়া গত বছর এই জাতীয় ৪৫টি অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রে করেছিল এবং এই বছর ৩৫ টি। কিন্তু আমরা একটিও উত্তর পাইনি। তিনি দাবি করেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম সংখ্যক সাইবার ট্যাক মার্কিন স্থান থেকে চালানো হয়।’ পুতিন সাংবাদিকদের আরও জানান, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্ভাব্য বন্দি বিনিময় পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং ‘সমঝোতা’ সম্ভব হতে পারে। এখন রাশিয়া ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নিয়ে কাজ করবে।’ আলোচনায় আর্কটিক মহাদেশে রাশিয়ার অস্ত্র সম্ভার বাড়ানোর অভিযোগ করে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু পুতিন তা অস্বীকার করেছেন।

সর্বশেষ খবর