বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্বে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় শিশু অপহরণ ধর্ষণ বেড়েছে

জাতিসংঘের প্রতিবেদন ইসরায়েল ও সৌদি আরবের নাম না রাখায় সমালোচনা

বিশ্বে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় শিশু অপহরণ ধর্ষণ বেড়েছে

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধবিক্ষুব্ধ এলাকায় শিশু হত্যা, অপহরণ ও সম্মুখ যুদ্ধে পাঠানোর প্রবণতা বাড়ছে। এ নিয়ে সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের শিশু এবং সশস্ত্র সংঘাত বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ভার্জিনিয়া গাম্বা জানান, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ এলাকায় শিশু অপহরণ শতকরা ৯০ ভাগ এবং ধর্ষণ এবং অন্যান্য ধরনের যৌন সন্ত্রাস ৭০ ভাগ বেড়েছে। বিশ্বের ২১টি সংঘাতপূর্ণ এলাকার সন্ত্রাস, নিপীড়ন-নির্যাতনের  শিকার ১৯ হাজার ৩৭৯ জন শিশুর তথ্য নিয়ে তৈরি এ প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছরে অন্তত ৮ হাজার ৫২১ জন শিশুকে সৈন্য হিসেবে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়েছে। ২ হাজার ৬৭৪ জন শিশু মারা গেছে আর ৫ হাজার ৭৪৮ জন আহত হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে সোমালিয়া, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, আফগানিস্তান, সিরিয়া এবং ইয়েমেনে শিশুরা সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন, নির্যাতনের শিকার হয়। প্রতিবেদনে একটি কালো তালিকা রাখা হয়েছে। যেখানে রয়েছে শিশু অধিকার ক্ষুণœ করছে যুদ্ধরত এমন গোষ্ঠী বা সংস্থার নাম। সে তালিকায় কখনো ইসরায়েলের নাম না থাকায় বিতর্ক দেখা দেওয়াটাই স্বভাবিক। হয়েছেও তাই। অপরদিকে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটকে ইয়েমেন যুদ্ধে শিশুদের অধিকার লঙ্ঘন করায় তালিকায় রাখা হয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালের কালো তালিকা থেকে জোটকে বাদ দেওয়া হয়। মূলত শিশু সুরক্ষা নিশ্চিতে দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টিই মূলত এই তালিকার লক্ষ্য। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের নাম তালিকায় না রাখায় জাতিসংঘের কঠোর সমালোচনা করেছে। শিশু নির্যাতনের জন্য দায়ী দেশগুলোর তালিকায় ইসরায়েলের নাম কোনোদিনই রাখা হয়নি।

কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা মনে করেন, ইসরায়েল এবং সৌদি আরব কালো তালিকায় তাদের নাম না রাখার জন্য সব সময় জাতিসংঘকে চাপ দেয়। প্রতিবেদনে বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধবিক্ষুব্ধ এলাকায় শিশু হত্যা, তাদের পঙ্গুত্ব বরণ করা ও যৌন নির্যাতন, অপহরণ কিংবা সৈন্য হিসেবে নিয়োগ করা, শিক্ষা এবং চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত করার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বিতর্ক এড়াতে ২০১৭ সালের গুতেরেসের প্রতিবেদনে যুদ্ধরত পক্ষগুলোর দুটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। একটি তালিকায় রাখা হয় শিশু সুরক্ষা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেওয়া পক্ষকে, অন্যটিতে থাকে সুরক্ষা পদক্ষেপ না নেওয়া পক্ষগুলো। সোমবার যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে উল্লেখযোগ কিছু পরিবর্তন এসেছে। শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছে না, এমন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর তালিকায় মিয়ানমার ও সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর নাম উঠে এসেছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শিশু হত্যা, তাদের পঙ্গু করা এবং যৌন সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে। আর সিরিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে শিশু সৈনিক নিয়োগ, হত্যা, পঙ্গু করা, যৌন সহিংসতার পাশাপাশি স্কুল এবং হাসপাতালে হামলার অভিযোগ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর