বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ ইইউর

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা জারি করল ইইউ এবং যুক্তরাজ্য। সোমবার তারা মিয়ানমারের সেনা পরিচালিত জান্তা সরকারের আট কর্মকর্তা এবং চারটি সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর আগে দুবার মিয়ানমারের একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। ইইউ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, ‘আমরা চাই না দেশের মানুষ সমস্যায় পড়ুক। কিন্তু জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কোনো উপায় নেই। তাদের আয়ের রাস্তাগুলো বন্ধ করা দরকার।’ ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে বিদ্রোহের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী।

আপাতত সেনার জান্তা সরকারই চলছে দেশে। গ্রেফতার করা হয়েছে মিয়ানমারের সর্বোচ্চ নেতা অং সান সু চিকে। সেনা সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলনকেও কড়া হাতে দমন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। মৃত্যু হয়েছে বহু আন্দোলনকারীর। গোটা বিষয়টির নিন্দা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য। তাদের বক্তব্য, যেভাবে দেশে নৈরাজ্য তৈরি করেছে নতুন সরকার, তা মেনে নেওয়া যায় না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ওই সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এবং সে জন্যই তৃতীয়বার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। যে চারটি সংস্থার বিরুদ্ধে এবার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার প্রতিটিই সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যে মুক্তা প্রস্তুতকারক সংস্থা এবং কাঠ রপ্তানিকারক সংস্থা রয়েছে। এ সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সেনাবাহিনীর আয় হয় বলে দাবি করেছে ইইউ। সে জন্যই ওই সংস্থাগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সেনাবাহিনীর আয়ের রাস্তা বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে। মিয়ানমারের সেনাপ্রধান অবশ্য বিকল্প রাস্তা খুঁজে বার করার চেষ্টা করছেন। আমেরিকা এবং ইইউ যখন তার সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক ব্যবস্থা নিয়ে যাচ্ছে, তিনি তখন রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করবেন। দুবার রাশিয়ায় গিয়ে সেখানকার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে রাশিয়া। ইইউ ব্যবস্থা নিলেও রাশিয়া মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে রাশিয়ার কাছ থেকেই সাহায্য পেতে চাইছে মিয়ানমারের সেনা সরকার। প্রাথমিক আলোচনায় লাভ হয়েছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, রাশিয়ার এ পদক্ষেপের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকে কি না, সে দিকে লক্ষ্য রেখেছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

সর্বশেষ খবর