বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ইরানের পরমাণু চুক্তির কি ইতি ঘটাবেন রাইসি?

ইরানের পরমাণু চুক্তির কি ইতি ঘটাবেন রাইসি?

জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশের পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবনের আশাবাদ তৈরি হয়। তবে সেই আশাবাদে এখন নতুন শঙ্কার ছায়া ফেলেছে ইরানে সরকার পরিবর্তনের ঘটনা। কট্টর রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি দায়িত্ব নেবেন আরও মাস দেড়েক পর, আগস্ট মাসে। রাইসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর এরই মধ্যে কিছুটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন এই পরমাণু চুক্তি নিয়ে তার অবস্থান। তিনি বলেছেন, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনাকে তিনি স্বাগত জানান। তবে এতে অবশ্যই ইরানের জাতীয় স্বার্থের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। তিনি আরও বলেছেন, ইরানের ব্যালাস্টিক মিসাইল সিস্টেম নিয়ে কোনো দরকষাকষি চলবে না।

 তার ভাষায়, ‘আমরা কেবল আলোচনার স্বার্থে আলোচনা চাই না। আলোচনাকে প্রলম্বিত করা যাবে না। প্রতিটি বৈঠকের ফল হতে হবে। এখান থেকে ইরানের মানুষের জন্য একটা ফলাফল বেরিয়ে আসতে হবে।’ বিবিসির ফারসি ভাষা বিভাগের বিশ্লেষক কাসরা নাজি বলছেন, প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই ইবরাহিম রাইসি যেসব কথাবার্তা বলেছেন, তা দেশের ভিতরে বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুব বেশি মানুষকে আশ্বস্ত করবে বলে মনে হয় না। তিনি নিজের এমন এক ছবি তুলে ধরেছেন, যাতে বোঝা যায় একজন কট্টরপন্থি হিসেবে তার নিজের পথ ঠিক করা আছে। ইরানের সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ছয় দেশ ২০১৫ সালে যে পরমাণু চুক্তি করে, সেটির লক্ষ্য ছিল, দেশটি যেন এই কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করে। তারা যেন পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে না পারে। এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করা ছয় শক্তিধর দেশ হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও জার্মানি। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তার মতে, এতে ইরানকে অনেক বেশি ছাড় দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্প শুধু এই চুক্তি থেকেই বেরিয়ে যাননি, তিনি ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

তবে গত এপ্রিল মাস থেকে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে আলোচনা অব্যাহত আছে। ভিয়েনায় রবিবার ছয়টি দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও জার্মানির প্রতিনিধিরা ইরানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সর্বশেষ দফা বৈঠক করেছেন। তবে রবিবারের বৈঠকের পর আলোচনা আপাতত মুলতবি রাখা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা তাদের রাজধানীতে ফিরে গেছেন।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আলোচনার সব হিসাবনিকাশ এখন পাল্টে গেছে ইরানে কট্টর রক্ষণশীল প্রার্থী ইবরাহিম রাইসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর।

সর্বশেষ খবর