শনিবার, ৩ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শতবার্ষিকী সামনে আরও সমৃদ্ধি, উত্থান

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শতবার্ষিকী সামনে আরও সমৃদ্ধি, উত্থান

চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। এখন তার সৃষ্টির শতবার্ষিকী উদযাপন করছে। গত পরশু ছিল জন্মদিন। এমন সময় এই উদযাপন যখন চীন হয়ে উঠেছে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। বিবিসির জন সাডওয়ার্থ লিখছেন, চীনের এই সাফল্যের একেবারে কেন্দ্রস্থলে রয়েছে এই কমিউনিস্ট পার্টির একক শাসন এবং তার একচ্ছত্র ক্ষমতার মূল্যবোধ, যা বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সময় আরও জোরালো হচ্ছে। একই সঙ্গে পশ্চিমা দুনিয়াতেও এ বিতর্ক ক্রমশ তীব্র হচ্ছে যে, এই মূল্যবোধের মোকাবিলা কীভাবে করা হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী ভাষণে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং তার দেশের স্বকীয়তার ঘোষণা দিয়েছেন। এমন কি হুংকার দিয়ে বলেছেন, চীনকে যদি এখন কেউ অবদমন করতে চায় তাহলে তাকে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। আর চীন নিয়ে কেউ মাথা ঘামালে তার মাথা ভেঙে দেওয়া হবে। গত ২০ বছরে চীন অনেক দূর এগিয়েছে। জীবনযাত্রার মান বদলেছে। আবার দমননীতিতে চরম অবস্থান গ্রহণ করেছে। উইঘুর নিয়ে তাদের এই মানসিকতা নিয়ে গোটা বিশ্বে সমালোচনা রয়েছে। চীনের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বিবিসি বাংলা কথা বলেছে সাবেক মার্কিন ডেমোক্র্যাট সেনেটর ম্যাক্স বাওকাস-যিনি ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত চীনে রাষ্ট্রদূত ছিলেন তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘চীনের বিশাল জনগোষ্ঠীর বড় অংশই এই পার্টিতে কোনো পরিবর্তনের ব্যাপার নিয়ে তেমন মাথা ঘামায় না। তারা অনেক বেশি চিন্তা করে তাদের নিজেদের জীবন নিয়ে।’ আর এ কারণে গত ২০ বছরে চীনের জীবনযাত্রার নাটকীয় উন্নতি হয়েছে। আর এ জন্য তারা খুবই খুশি। চীনকে দমন করতে নানা কৌশল নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে পুরো সমর্থন পাচ্ছে তা অনুগত পশ্চিমা বিশ্বের। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এই প্রশ্নে মতপার্থক্য আছে। এক পক্ষ মনে করে, আদর্শগত দিক থেকে চীনকে ‘কনফ্রন্ট’ বা মুখোমুখি মোকাবিলা করা উচিত, আবার আরেক পক্ষ মনে করে যে, চীনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক রেখে চলাটাই হবে সঠিক পথ। বেইজিংয়ের অভিজাত সেন্ট্রাল পার্টি স্কুলের একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক হচ্ছের কাই শিয়া। তার কর্মজীবন কেটেছে সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করে, তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে। কিন্তু পরের দিকে চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে তার মনে সংশয় আর সমালোচনা বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত গত বছর তিনি কার্যত নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন। চীনের জনগণ রাজনৈতিক পরিবর্তন চায় না, এমন কথাবার্তার সঙ্গে তিনি একমত নন। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখোমুখি না দাঁড়িয়ে তার সঙ্গে ‘এনগেজড’ হওয়াটাই উত্তম পন্থা, এমন ধারণাও সমর্থন করেন না কাই শিয়া। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শতবার্ষিকী উপলক্ষে এই যে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান, এ কি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা মাত্র? না কি অন্য কিছুর গল্প? আসলে ভবিষ্যৎ চীনের চিত্র হচ্ছে, আরও বেশি প্রভাবশালী, আরও সমৃদ্ধ, ধনতান্ত্রিক চীন এবং যার কেন্দ্রে রয়েছে একটি অনড় লেনিনিস্ট পদ্ধতি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর