রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

রাঘববোয়ালকেও ছাড় দেবেন না কিম

রাঘববোয়ালকেও ছাড় দেবেন না কিম

ওয়ার্কার্স পার্টি অব কোরিয়ার পলিটব্যুরোর শীর্ষ পর্যায়ে রদবদল ঘটাতে যাচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। আগামী মঙ্গলবার তিনি পলিটব্যুরোর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এই বৈঠকে তিনি এমনই পদক্ষেপ নেবেন, যার ফলে দেশটির কোনো রাঘববোয়ালই অপরাধ করে ছাড় পাবেন না। সূত্র : রয়টার্স।

দেশটির সরকারি গণমাধ্যমের খবরে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে দায়িত্বে অবহেলার জন্য দলের নির্বাহী সদস্যদের তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন কিম। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সময়োপযোগী দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগও তুলেছেন কিম।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কোরীয় সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির খবর বলছে, মঙ্গলবারের বৈঠকে নতুন পলিটব্যুরো সদস্য ও দলের  সেন্ট্রাল কমিটির সেক্রেটারি নির্বাচন করা হবে। তবে দল থেকে কাদের বহিষ্কার করা হচ্ছে, তা জানানো হয়নি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সময় সৃষ্ট সংকটের জন্য যাদের ভর্ৎসনা করা হয়েছে, তাদেরই বহিষ্কার করা হচ্ছে কি না, তা-ও স্পষ্ট করা হয়নি।

উত্তর কোরিয়াবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থার্টি এইট নর্থ প্রজেক্টের বিশ্লেষক মিখাইল ম্যাডেন বলেন, এ ধরনের বৈঠক ও রদবদলের ঘটনা ব্যতিক্রমী। ম্যাডেন মনে করেন, উত্তর কোরিয়ার মতো একনায়কতান্ত্রিক দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে কারও ক্ষতি করার জন্য এ ধরনের অনিয়মিত রাজনৈতিক বৈঠকের আয়োজন করতে পারেন কিম। এ ধরনের বৈঠক উত্তর কোরিয়ায় চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার আভাস দেয়।

ম্যাডেন তার বিশ্লেষণে আরও দাবি করেন, রদবদল নিয়ে উত্তর কোরিয়ার পলিটব্যুরোর এ ধরনের বৈঠক দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য সতর্কতা হতে পারে। তাদের বুঝতে হবে যে কোনো সময় তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ও ক্ষমতা দোদুল্যমান হতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার সাবেক কূটনীতিক থায়ে ইয়োং-হো এখন দক্ষিণ কোরিয়ায় আইনপ্রণেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে এক বিশ্লেষণে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে কিম শীর্ষ সামরিক পরিষদের (ন্যাশনাল ডিফেন্স কমিশন) উপ-প্রধানের পদ থেকে তার চাচা জ্যাং সং-থায়েককে অপসারণ করেন। তার চাচাকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেন। এ ছাড়া সং-থায়েকের দুই সহযোগীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেন। ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর  কোরিয়ার রাজনীতিতে বড় ধরনের নাটকীয়তা ঘটতে যাচ্ছে আগামী মঙ্গলবারের বৈঠকে।

থার্টি এইট নর্থের আরেক বিশ্লেষক রাচেল মিন ইয়ং লি বলছেন, গত বছর  থেকে কিম তার দলে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে রদবদল শুরু করেছেন। কিম সে সময় দলের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তাকে রদবদল করেন। এ ছাড়া কিম সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের একের পর এক বদলি করেন। পদমর্যাদা লাঘব করেন। সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পুনর্বহালও করা হয়েছে। মিন ইয়ং লি আরও বলেন, যারা নির্দেশনা ও নিয়ম অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন, কিম তাদের বরখাস্ত করেছেন অথবা পদমর্যাদা লাঘব করেছেন। তারা যত বেশি দিন ধরে যত উচ্চ পদেই থাকুন না কেন, তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।

তবে এ সপ্তাহে কাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বা বরখাস্ত করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করে জানায়নি উত্তর কোরিয়ার সরকারি গণমাধ্যম। সরকারি টিভিতে প্রচারিত খবরের সূত্র ধরে কয়েকজন বিশ্লেষক বলছেন, দলের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পলিটব্যুরোর স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য রি পিয়ং চল, সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফের প্রধান প্যাক জং চন, দলের সেক্রেটারি এবং বিজ্ঞান ও শিক্ষাবিষয়ক বিভাগের পরিচালক শোয়ে স্যাং গনকে বরখাস্ত করা হতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন মন্ত্রণালয়ের উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কবিষয়ক এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, রি পিয়ং চল, প্যাক জং চন এবং শোয়ে স্যাং গনকে রদবদল করার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর