মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

টিকা বানিয়ে নিজেদের সংকট কাটাতে চায় আফ্রিকা

টিকা বানিয়ে নিজেদের সংকট কাটাতে চায় আফ্রিকা

আফ্রিকায় নতুন করে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু অন্য মহাদেশের চেয়ে আফ্রিকার দেশগুলো টিকাদানে পিছিয়ে আছে। বিশ্বের ধনী দেশগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে প্রায় সব টিকা মজুদ করায় সমস্যায় পড়েছে আফ্রিকার গরিব দেশগুলো। এবার নিজেরাই তাদের এই সমস্যার সমাধান করতে চায়। করোনার টিকা তৈরি করা হবে তাদের কারখানায়। আফ্রিকার বিপদের বিষয় হলো সেখানকার জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশ এখন পর্যন্ত করোনার টিকা নিতে পেরেছে, আড়াই শতাংশ পেয়েছে প্রথম ডোজ। অথচ ইউরোপের অর্ধেক মানুষই এর মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। প্রতি তিনজনের একজন দুই ডোজই পেয়েছেন। টিকা না পাওয়ায় আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের নেতারাই উন্নত দেশগুলোর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহে কাম্পালায় আয়োজিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে উগান্ডার প্রেসিডেন্ট উওয়েরি মুসেভেনি বিষয়টিকে স্বার্থপরতা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে আফ্রিকার দেশগুলোর নিজেদেরই এর সমাধান বের করার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘এটা লজ্জাজনক যে, আফ্রিকা মহাদেশ ঘুমাচ্ছে এবং অন্য কেউ এসে উদ্ধার করবে সেই আশায় অপেক্ষা করছে।’ শুধু করোনা নয়, যে কোনো রোগের টিকার জন্যই আফ্রিকাকে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ বা এশিয়ার দেশগুলোর ওপর নির্ভর করতে হয়।

 যত টিকা প্রয়োজন হয় তাদের তার মাত্র এক শতাংশ নিজেরা উৎপাদন করতে পারে। বর্তমানে তিউনিশিয়া, আলজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সেনেগালে রয়েছে টিকার কারখানা।

অবশ্য এই পরিস্থিতির বদল ঘটার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশ কারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগ ও পরিকল্পনা নিয়েছে। ২০৪০ সালের মধ্যে টিকার চাহিদার ৬০ শতাংশ অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে আফ্রিকা ইউনিয়ন। তবে এই পরিকল্পনার পথে আফ্রিকাকে বেশ কিছু বাধা অতিক্রম করতে হবে।

টিকা উৎপাদনের জন্য বিশেষ প্রযুক্তিগত কাঠামোই শুধু প্রয়োজন নয়, সঙ্গে দক্ষ কর্মী ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও চাই। আর সবকিছুর জন্য লাগবে বিপুল বিনিয়োগ। এমনকি শিল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতিষ্ঠানগুলোও বিশাল আকারের এই বিনিয়োগ একা করে না। এক্ষেত্রে সরকার এগিয়ে আসে যা আফ্রিকার অনেক দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। যে কারণে সেনেগাল, তিউনিশিয়া ও আলজেরিয়ার মতো হাতে গোনা কয়েকটি দেশ উন্নয়ন অংশীদারদের সহযোগিতায় উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পেরেছে। অন্যদিকে বিনিয়োগের অভাবে বছরের পর বছর চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়ার মতো দেশগুলো। তবে মহামারীর ধাক্কায় একটি পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন দেশ মিলে বেশ কয়েকটি প্রকল্প চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। এক্ষেত্রে ইইউ, বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে।

সর্বশেষ খবর