বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
হংকংয়ে রেহাই পাচ্ছে না স্কুলশিক্ষার্থীও

গণতন্ত্রকামীদের জঙ্গি আখ্যা চীনা পুলিশের

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে উত্তাল হংকং। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চীনের দমন-পীড়ন। এবার গণতন্ত্রকামীদের জঙ্গি বলে আখ্যা দিচ্ছে কমিউনিস্ট দেশটি। ছাড়া পাচ্ছে না স্কুল শিক্ষার্থীরাও। গত ১ জুলাই অর্থাৎ চীনের কাছে হংকং হস্তান্তরের বর্ষপূর্তির দিন স্বশাসিত প্রদেশটিতে ৫০ বছরের এক ব্যক্তি এক পুলিশকর্মীকে ছুরিকাঘাত করার পর আত্মহত্যা করেন। পুলিশের দাবি, এটি আসলে জঙ্গি হামলা। উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে গত শুক্রবার সেই হামলার জায়গায় বেশ কিছু মানুষ জড়ো হয়ে ফুল দিয়ে নিহত হামলাকারীকেই শ্রদ্ধা জানান বলে সরকারপক্ষের অভিযোগ। তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হংকংয়ের চীনপন্থি প্রশাসক ক্যারি লাম। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষ বেআইনি পথে ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে চলেছেন।’ এদিকে, লামের ভাষণের পরই মঙ্গলবার পুলিশ জানায়, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে বিস্ফোরক ব্যবহারের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে ৬ স্কুলপড়ুয়াসহ নয়জনকে গ্রেফতার করেছে তারা। এদের বয়স ১৫ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে। সবাই ‘রিটার্নিং ভ্যালিয়েন্ট’ নামে একটি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর সদস্য। পুলিশের অভিযোগ, আদালত, সরকারি অফিসে বোমা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল আটকরা।

 

বিশ্লেষকদের মতে, গণতন্ত্রকামীদের শায়েস্তা করতে এবার সাজানো মামলা করছে চীনা পুলিশ। স্কুলছাত্রদের বিরুদ্ধেও ‘মিথ্যা’ মামলা করা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন যখন চীনের হাতে হংকং হস্তান্তর করে, তখন শহরের নিজস্ব চরিত্র, স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য রক্ষায় রাজি হয়েছিল বেইজিং। কিন্তু শর্ত ভেঙে তারা যে দখলদারি কায়েম করতে চাইছে, তা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই তোলপাড় চলছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে হংকং থেকে সন্দেহভাজন অপরাধীদের চীনে প্রত্যর্পণের জন্য আনা একটি বিল নিয়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন লাম। শেষমেশ সেটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরও হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাস হয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদ, চীন সরকারের বিরোধিতা, সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম, জাতীয় সুরক্ষা বিপন্ন করতে বিদেশিদের সঙ্গে জোট বাঁধার মতো অপরাধের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে নয়া আইনে। হংকংয়ের রাজনৈতিক আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ওই আইন আদতে তাদের দমন করার কাজেই ব্যবহার করা হবে।

সর্বশেষ খবর