সোমবার, ১২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

হাইতির প্রেসিডেন্ট খুনের সেই মুহূর্তের বিবরণ দিলেন তাঁর স্ত্রী

হাইতির প্রেসিডেন্ট খুনের সেই মুহূর্তের বিবরণ দিলেন তাঁর স্ত্রী

হাইতির প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জোভেনল ও তার স্ত্রী মার্টিন ময়িস

নিরাপত্তার চাচরে ঢাকা প্রেসিডেশিয়াল প্রাসাদ। সেখানে মধ্যরাতে ভাড়াটে ঘাতকরা আচমকাই ঢুকে চোখের সামনেই গুলিতে ঝাঁজরা করে দিয়েছে প্রেসিডেন্টকে। স্ত্রীর সামনে এই হত্যাকান্ড। স্বামীকে হত্যার সেই দৃশ্য গতকাল বর্ণনা করেছেন হাইতির নিহত প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িসের স্ত্রী মার্টিন ময়িস। তিনি বলেন, হামলা এত দ্রুত ঘটেছে যে তার স্বামী জোভেনেল ময়িস একটি কথা পর্যন্ত বলতে পারেননি। বিবিসি জানায়, গত ৭ জুলাই ২৮ জন বিদেশি ভাড়াটে ঘাতক প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িসের বাসভবনে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে। হামলায় মার্টিন ময়িসও আহত হন। চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লোরিডা রাজ্যের মায়ামিতে নেওয়া হয়। শনিবার মার্টিন তার টুইটার পেজে একটি ‘ভয়েস মেসেজ’ পোস্ট করেছেন। এ বার্তাতেই মার্টিন স্বামী হত্যার সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, ‘মধ্যরাতে চোখের পলকে ভাড়াটে হত্যাকারীরা বাড়িতে ঢুকে আমার স্বামীকে গুলিতে ঝাঁজরা করে দিল, তাঁকে একটি কথা বলারও সুযোগ দেওয়া হয়নি।’ রাজনৈতিক কারণে তাঁর স্বামীকে নিশানা করা হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্টিন। বলেছেন, বিশেষ করে সংবিধান পরিবর্তনে গণভোট পরিকল্পনার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁকে হত্যার নির্দেশদাতা কে এবং হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্যই বা কী তা এখনো স্পষ্ট নয়। হাইতি কর্তৃপক্ষ বলছে, হত্যাকান্ডে ২৮ জন অংশ নেয়। এদের মধ্যে ২৬ জন কলম্বিয়ার।

 এবং দুজন হাইতি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক।

হামলাকারীরা প্রেসিডেন্টের স্বপ্নকে হত্যা করতে চায় বলেও জানান মার্টিন। তিনি বলেন, ‘হামলার ঘটনায় আমি বেঁচে গেছি। কিন্তু আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি।’

নিহত প্রেসিডেন্ট ময়িসের কাজ এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করে মার্টিন বলেন, ‘আমি কাঁদছি, এটা ঠিক। কিন্তু আমরা দেশকে পথহারা হতে দিতে পারি না। আমার স্বামী, আমাদের প্রেসিডেন্টকে আমরা অনেক ভালোবাসি। তিনিও আমাদেরকে ভালোবাসতেন। তার রক্ত আমরা বৃথা যেতে দিতে পারি না।’

৫৩ বছর বয়সী জোভেনেল ময়িস ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে হাইতির প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছিল। তাঁর আমলে দেশটি প্রায়ই সহিংস সরকারবিরোধী বিক্ষোভে জর্জরিত হয়েছে। এ বছরের শুরুতেও হাইতির রাজধানী ও অন্যান্য কয়েকটি শহরে ময়িসের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। লাগাতার অস্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক বিভাজন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাক ও মানবিক সংকটে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্যতম গরিব দেশে পরিণত হয়েছে হাইতি। দেশটিতে রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়তে থাকার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ময়িস খুন হয়েছেন। এরাই প্রেসিডেন্টের বাড়িতে ঢুকে গুলি চালিয়েছিল। ঘাতক দলের ১৭ জন এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে এবং তিনজন পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর