উত্তর আয়ারল্যান্ড ঘিরে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চুক্তিতে পরিবর্তনের দাবি করলেও ব্রাসেলস সে সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে। দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়ার পর গত বছরই ব্রেক্সিট কার্যকর হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেছে। কিন্তু সে বিচ্ছেদের কালো ছায়া আবার নতুন করে সংঘাতের কারণ হয়ে উঠছে। কারণ উত্তর আয়ারল্যান্ড। ইইউ সদস্য দেশ আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ব্রিটেনের একমাত্র স্থলসীমান্তে নিয়ন্ত্রণ এড়াতে ব্রেক্সিট চুক্তির মধ্যে বিশেষ ‘নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রটোকল’ নামের এক ধারা রাখা হয়েছিল। এর আওতায় ব্রিটেনের সেই প্রদেশে ইইউর শুল্ক ও একক বাজারের নিয়ম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ফলে উত্তর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ব্রিটেনের বাকি অংশের মধ্যে কার্যত নতুন এক সীমা সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষরের সময় সে ধারাকে ব্রিটেনের বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরলেও এখন বেঁকে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। তিনি নতুন করে দরকষাকষি করতে ইইউর ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন এবং জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে জনসন আবেদন-নিবেদন থেকে শুরু করে হুমকিও দিয়েছেন।
ফন ডেয়ার লাইয়েন নতুন করে ‘নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রটোকল’-এ কোনোরকম পরিবর্তনের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দেন। তবে সে চুক্তির কাঠামোর মধ্যে ‘সৃজনশীল’ ও ‘নমনীয়’ কোনো সমাধানসূত্র নিয়ে আলোচনা করতে তাঁর আপত্তি নেই। তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডে স্থিতিশীলতার স্বার্থে এবং অনিশ্চয়তা এড়াতে উভয় পক্ষের অঙ্গীকারের ওপর জোর দেন।বরিস জনসনের সরকার বুধবার ‘নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রটোকল’-এ পরিবর্তনের কিছু প্রস্তাব মেনে নেওয়ার জন্য ব্রাসেলসের উদ্দেশে ডাক দিয়েছিল। ব্রেক্সিটের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডেভিড ফ্রস্ট বলেন, বর্তমান বিধিনিয়মের কারণে উত্তর আয়ারল্যান্ডে শান্তি হুমকির মুখে পড়েছে। তাই ন্যায্য ও বাস্তবসম্মত সমাধানসূত্রের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তিনি প্রটোকলের কিছু নিয়ম স্থগিত রেখে ‘চূড়ান্ত’ বোঝাপড়ার পক্ষে সওয়াল করেন।