আফগানিস্তানে মে ও জুন মাসে প্রায় ২ হাজার ৪০০ বেসামরিক লোক নিহত ও আহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। বিশ্ব সংস্থাটি জানায়, ২০০৯ সাল থেকে রেকর্ড রাখা শুরুর পর এবার এই দুই মাসে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তালেবান বিদ্রোহীদের লড়াই বৃদ্ধিই এর কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন (ইউএনএএমএ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তারা জানুয়ারি ও জুনের মধ্যে ৫ হাজার ১৮৩ জন বেসামরিক হতাহত হওয়ার তথ্য নথিবদ্ধ করেছে, এদের মধ্যে ১ হাজার ৬৫৯ জন মারা গেছেন। এই সংখ্যাটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৭ শতাংশ বেশি বলে জানিয়েছে ইউএনএএমএ। আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের ২০ বছরের উপস্থিতির ইতি ঘটিয়ে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সবাইকে ফিরিয়ে আনা হবে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এমন ঘোষণা দেওয়ার পর মে ও জুনে তালেবান বিদ্রোহীদের সঙ্গে আফগান সরকারি বাহিনীগুলোর তীব্র লড়াই শুরু হয়। দুই পক্ষের এই লড়াইয়ের মধ্যে আফগানিস্তানের বেসামরিকরা কতটা মারাত্মক পরিস্থিতিতে পড়েছেন এই সংখ্যাগুলো সেই চিত্রই তুলে ধরেছে বলে মন্তব্য বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। এক বিবৃতিতে ইউএনএএমএ বলেছে, ‘১ মে থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা হঠাৎ করে এত বৃদ্ধি পেয়েছে যা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। পূর্ববর্তী চার মাসে যত সংখ্যক হতাহতের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে মে-জুনে প্রায় তার সমপরিমাণ হয়েছে।’ তালেবান বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করার পর গত দুই মাসে আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বিদ্রোহীরা গ্রামপ্রধান জেলা, সীমান্ত ক্রসিংগুলো নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পাশাপাশি প্রাদেশিক রাজধানীগুলো ঘিরে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে বিমান হামলা চালিয়ে বিদ্রোহীদের হটানোর চেষ্টা করছে আফগানিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতেও কাতারের রাজধানী দোহায় দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীরা বৈঠক করেছেন। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর থেকে শন্তি আলোচনা শুরু হলেও এ পর্যন্ত সামান্য অগ্রগতি হয়েছে বলে সতর্ক করেছেন কূটনীতিকরা।