বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

তিন মাসেই কমে যাচ্ছে ফাইজার অ্যাস্ট্রাজেনেকার অ্যান্টিবডি!

তিন মাসেই কমে যাচ্ছে ফাইজার অ্যাস্ট্রাজেনেকার অ্যান্টিবডি!

দুই বছরের করোনা ভয়ের মধ্যে আশা জাগাচ্ছে টিকা বা ভ্যাকসিন। কিন্তু টিকা নেওয়ার পর অ্যান্টিবডির মেয়াদ কত দিন? এ প্রসঙ্গে নানা মুনির নানা মত উঠে এসেছে। চলছে গবেষণাও। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের গর্ভে। সম্প্রতি এ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট জার্নালে। ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, করোনার টিকা সম্পূর্ণ করার পর ছয় সপ্তাহের মধ্যে কমতে শুরু করছে অ্যান্টিবডির সংখ্যা। ১০ সপ্তাহের মধ্যে সেই সংখ্যা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাচ্ছে। রিপোর্টে ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই দুটি টিকার ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবডি কমার দাবি করা হয়েছে। এও জানানো হয়েছে, ফাইজারের টিকা নেওয়ার ফলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তুলনায় শরীরে বেশি অ্যান্টিবডি উৎপাদন হচ্ছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনই ভারতে কভিশিল্ড নামে পরিচিত। তবে অ্যান্টিবডি হ্রাসের দ্রুততা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায়নি।

ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে দেহে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয় টিকা নেওয়ার ফলে তার থেকে অনেক বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা কমে যাওয়ায় উদ্বেগ থাকছেই। ইউসিএল ইনস্টিটিউট অব হেল্থ ইনফরমেটিক্স-এর পক্ষ থেকে মধুমিতা শ্রোত্রি বলেন, ‘ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অ্যান্টিবডি উৎপাদনের মাত্রা যথেষ্ট ভালো। সেই কারণে প্রাথমিক স্তরে দুটি টিকাই করোনার ক্ষেত্রে কার্যকর।’ তবে দুই-তিন মাসের পর থেকে অ্যান্টিবডি কমার হার বাড়তে শুরু করছে।

জার্নালে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, ফাইজারের ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ২১-৪১ দিনের মধ্যে প্রতি মিলিলিটারে ৭ হাজার ৫০৬ ইউনিট অ্যান্টিবডি তৈরি হতো। সেখানে টিকা নেওয়ার ৭০ দিনের পর তা কমে দাঁড়াচ্ছে প্রতি মিলিলিটারে ৩ হাজার ৩২০ ইউনিট। সেখানে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ০-২০ দিনের মধ্যে প্রতি মিলিলিটারে ১ হাজার ২০১ ইউনিট অ্যান্টিবডি তৈরি হতো। ৭০ দিন পরে তা কমে দাঁড়াচ্ছে ১৯০ ইউনিট প্রতি মিলিলিটারে। তাহলে এক্ষেত্রে কাদের বুস্টার ডোজ নেওয়া প্রয়োজন, সমীক্ষকদের দাবি, যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডি তুলনামূলকভাবে কম। ফলে বুস্টার ডোজ নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কথাই আগে ভাবতে হবে। তবে অ্যান্টিবডি হ্রাসের পরিমাণ সবার ক্ষেত্রে এক নাও হতে পারে। শারীরিক গঠন ও কোষের কার্যকারিতার ওপরও অ্যান্টিবডি হ্রাসের মাত্রা নির্ভর করে।

এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার মঙ্গলবার আর্মড ফোর্স মেডিক্যাল কলেজের (এএফএমসি) একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে জানিয়েছে, করোনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কভিশিল্ড ৯৩ শতাংশ কার্যকর। মৃত্যু হার কমানোর ক্ষেত্রে ৯৮ শতাংশ কার্যকর এই ভ্যাকসিন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সমীক্ষা চালায় এএফএমসি।

সর্বশেষ খবর