বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

এই তালেবানকে রুখবে কে?

অবরুদ্ধ মাজার-ই-শরিফে আফগান প্রেসিডেন্ট

এই তালেবানকে রুখবে কে?

বানের পানি যেমন হু হু করে ঢুকে, তেমনি তালেবানও হু হু করে ঢুকে পড়ছে আফগানিস্তানের প্রদেশগুলোতে। মঙ্গলবার আরও তিনটি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে নিয়েছে তালেবান মিলিশিয়ারা। ফলে দেশটির ৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর ৯টিই এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সুযোগে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে তালেবান।

সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বাঘলান প্রদেশের রাজধানী পুল-ই-খুমরি দখল করে তালেবান। পাশাপাশি দেশের পশ্চিমের ফারাহ প্রদেশও কবজা করেছে জঙ্গিরা। মাত্র পাঁচ দিনে দেশের ৯টি প্রাদেশিক রাজধানী জিহাদিদের দখলে চলে যাওয়ায় রীতিমতো বেকায়দায় পড়েছে আফগান সেনাবাহিনী।

সরকারি বাহিনী রাজধানীগুলো উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে গেলেও তালেবানের শক্তির কাছে টিকতে পারছে না। এদিকে তালেবানের হাতে অবরুদ্ধ হয়ে আছে উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার-ই-শরিফ।

সেখানে নিজের বাহিনীকে উৎসাহ দিতে সফর করেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। শহরের এক চতুর্থাংশ এখন তালেবানের দখলে রয়েছে। সেখানে গিয়ে আফগান প্রেসিডেন্ট কথা বলবেন মাজার-ই-শরিফের স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি আতা মোহাম্মদের সঙ্গে। আতা মোহাম্মদের নিজের মিলিশিয়া বাহিনী রয়েছে। সেখানে আরও আছে আব্দুল রশিদ দস্তুমের অধীনে থাকা একটি মিলিশিয়া বাহিনীও। উভয় বাহিনীই তালেবান মিলিশিয়াদের বিরোধী। মাজার-ই-শরিফকে বাঁচাতে এই দুই পক্ষের সঙ্গে সন্ধি করার চেষ্টা করবেন আফগান প্রেসিডেন্ট। এই শহরের পতন আফগানিস্তানের জন্য বড় ধাক্কা হবে। এখন পর্যন্ত প্রধান শহরগুলোর একটিও তালেবান দখল করতে পারেনি। তবে মাজার-ই-শরিফ হাতছাড়া হওয়া মানে পুরো উত্তর আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণই তালেবানের হাতে চলে যাওয়া।

তবুও শান্তি ফেরাতে দোহায় চলছে বৈঠক : সন্ত্রাসের ছায়ায় শান্তি ফেরানোর চেষ্টা! শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই হচ্ছে কাতারের রাজধানী দোহায়। আফগানিস্তানে  শান্তি ফেরাতে ওই শহরে তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে আমেরিকাসহ একাধিক দেশ। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই বৈঠক থেকে বাদ পড়েছে ভারত। এএনআই সূত্রে খবর, দোহায় তালেবানের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে আমেরিকা, চীন, কাতার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, উজবেকিস্তান, পাকিস্তান ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা।

 

আফগান সরকারের পক্ষে ওই আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন কাবুলের মধ্যস্থতাকারী আবদুল্লা আবদুল্লা। রয়েছেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত জালমে খলিলজাদ। বলে রাখা ভালো, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকেই দোহায় তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চলছে। যদিও তাতে কোনো ফল মেলেনি।

রুখে দাঁড়ানোর ডাক বাইডেনের : তালেবানের বিরুদ্ধে আফগান নেতাদেরই এককাট্টা হতে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে এখনই। হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে আর্জি জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এভাবেই আফগানিস্তান নিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলল আমেরিকা। এপ্রিলের শুরুতে বাইডেন ঘোষণা করেন, ধীরে ধীরে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেবে সেনা। ৩১ আগস্টের মধ্যে সম্পন্ন হবে প্রক্রিয়া। তারপর থেকেই সেদেশে সক্রিয় হয়ে ওঠে তালেবানরা। একের পর এক শহর, জনপদ দখল করছে শুরু করে। এরমধ্যে বাইডেন আফগান নেতাদের উদ্দেশে বললেন, ‘?আফগান নেতাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নিজেদের জন্য, গোটা দেশের জন্য লড়াই করতে হবে।’? তবে বাইডেন এও জানিয়ে দিলেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর কোনো আফসোস নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর