শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

হ্যাকাররা সরাল ৫ হাজার কোটি টাকা

হ্যাকাররা সরাল ৫ হাজার কোটি টাকা

দিন দিন প্রসার লাভ করছে ডিজিটাল মুদ্রা বা বিট কয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধনী ইলন মাস্কও এই মুদ্রার পিছনে ছুটছেন। যদিও আম জনতার কাছে তা খুব একটা পরিচিতি লাভ করেনি। তাদের কাজটি মূলত পলি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন         ব্লকচেইনের মধ্যে ব্যবহারকারীদের টোকেন স্থানান্তরের সুযোগ করে দেওয়া। হ্যাকাররা এবার হামলা করেছে অনলাইনের সেই ডিজিটাল মুদ্রা সম্রাজ্যে। গত মঙ্গলবার তাদের প্লাটফর্মটিরই একটি দুর্বলতার সুযোগে ৬১.৩ কোটি ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি সরিয়ে ফেলে হ্যাকাররা। যদিও পরবর্তীতে ২৬ কোটি ডলার ফেরতও দিয়েছে তারা। পলি নেটওয়ার্ক কারা চালায় প্রাথমিকভাবে সেটি জানা যায়নি। তবে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিষয়ক ওয়েবসাইট কয়েনডেস্কের তথ্য অনুযায়ী চীনের বকচেইন উদ্যোগ নিও এর প্রতিষ্ঠাতারাই এটি চালু করেন।

পলিনেটওয়ার্ক কার্যক্রম মূলত ক্রিপ্টোকারেন্সি সবচেয়ে বড় লেনদেন প্লাটফর্মগুলোর একটি বাইন্যান্স স্মার্ট চেইন নেটওয়ার্কের ইথেরিয়াম ও পলিগন ব্লকচেইননির্ভর। প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্লকচেইনগুলোর মধ্যে ‘স্মার্ট কনট্রাক্ট’ নির্ভর টোকেন চালাচালি করতে হয়, যার ওপর ভিত্তি করেই এই ডিজিটাল মুদ্রার লেনদেন হয়।

পলিনেটওয়ার্কের একটি স্মার্ট কনট্রাক্টে বিশাল অঙ্কের তারল্য ছিল। হ্যাকারদের নজর পড়ে সেখানেই। পলি নেটওয়ার্ক টুইটে জানিয়েছে, হ্যাকাররা এই স্মার্ট কনট্রাক্টের একটি দুর্বলতা ধরে সিস্টেমে ঢুকে পড়ে। ডিজিটাল মুদ্রা ইথেরিয়ামের প্রোগ্রামার কেলভিন ফিচার এর ধারণা হ্যাকাররা তিনটি ব্লকচেইনে ঢুকে লেনদেনের নির্দেশনাগুলো পাল্টে দেয় এবং টাকাগুলো তিনটি ওয়ালেট ঠিকানায় স্থানান্তর করে। বকচেইন ফরেনসিক কোম্পানি চায়নালাইসিসের তথ্য অনুযায়ী হামলাকারীরা ১২টি ভিন্ন ভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে অর্থ সরিয়েছে।

হ্যাকাররা পরবর্তীতে ২৬ কোটি ডলার ফেরত দিলেও ৩৫ কোটি ডলারের বেশি অর্থের এখনো কোনো হদিস নেই। 

 

কয়েনডেস্কের তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার হ্যাকাররা তিনটি ওয়ালেট থেকে অর্থগুলো কার্ভডট ডট এফআই নামের একটি ডিজিটাল মুদ্রা লেনদেনকারী পাটফর্মে বা লিকুইডিটি পুলে সরাতে চেষ্টা করে। তবে এতে তারা সক্ষম হয়নি। তবে ১০ কোটি ডলার ইলিপসিস ফাইন্যান্স নামের একটি ‘লিকুইডিটি পুলে’ সরিয়ে ফেলে।

এই হ্যাকিংয়ের পেছনে কারা জড়িত বিশ্লেষণকারীরা তার কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি। তবে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন নজরে রাখা কয়েকটি ওয়েবসাইটে একজন কথিত হ্যাকারের ডিজিটাল বার্তা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন মজা করতে এবং সিস্টেমের দুর্বলতা দেখিয়ে দেওয়ার জন্যই এই কাজ করেছেন। অর্থের প্রতি আগ্রহ নেই এমন কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন টোকেনগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা তার আগে থেকেই  ছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘ব্লকচেইন প্রযুক্তির কারণেই ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি করা বেশ কঠিন। কারণ, সবাই দেখতে পাবে নেটওয়ার্কের কোথা থেকে কোথায় গিয়ে অর্থ ঢুকছে। আমার মনে হয়, এই হ্যাকাররা অর্থ চুরির পর বুঝতে পেরেছে, তারা অর্থ সরালে সবাই সেটা বুঝতে পারবে, হয়তো সে কারণেই ফিরিয়ে দিতে চাইছে।’

সর্বশেষ খবর