বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
মোল্লা আবদুল গনি বারাদার

আফগানিস্তানের সম্ভাব্য শাসক কীভাবে তার উত্থান

আফগানিস্তানের সম্ভাব্য শাসক  কীভাবে তার উত্থান

মোল্লা আবদুল গনি বারাদার

তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের তিন দিনের মধ্যেই আফগানিস্তানে ফিরেছেন সংগঠনের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বারাদার। কাতারের দোহা থেকে একটি বিশেষ বিমানে করে গতকাল আরও কয়েকজন সিনিয়র তালেবান নেতাকে নিয়ে তিনি কান্দাহারে নামেন।

আমেরিকান হামলার মুখে ২০০১ সালে তালেবানের অন্য নেতাদের সঙ্গে প্রথমে কাবুল, তারপর দেশে ছেড়ে পাকিস্তানে পালিয়েছিলেন বারাদার। এরপর সন্ত্রাসের মামলায় আট বছর পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন।

তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বারাদার। ২০১০ সালে পাকিস্তানের কারাচিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন এ নেতা। ২০১৫ সালে আমেরিকার বিমান হামলায় মোল্লা ওমর মারা যান। তারপর তালেবানের নেতা হন আখতার মনসুর। তিনি ২০১৬ সালে ড্রোন হামলায় মারা যাওয়ার পর ক্ষমতায় আসেন হিবাতুল্লা আখুন্দজাদা। তবে দলের প্রথম সারির চারজনের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বারাদার। জানা গেছে, তালেবান প্রতিষ্ঠাতা ওমরের ছেলে মোল্লা ইয়াকুবের সঙ্গে বারাদারের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের পর থেকেই নতুন একটি সরকার গঠনের জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে এবং বারাদারই যে আফগানিস্তানে প্রধান হচ্ছেন তার ইঙ্গিত মিলছে। যদিও হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা তালেবানের আমির বা শীর্ষ নেতা, কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ইঙ্গিত তা হলো কাবুলে আসন্ন সরকারের প্রধান হতে চলেছেন তার ডেপুটি  বারাদার। কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর রবিবার দোহায় বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় তালেবানের সাদা পতাকা সামনে নিয়ে বারাদারই যুদ্ধে বিজয়ের ঘোষণা দেন। বিজয়ের এ ঘোষণা কিন্তু আখুন্দজাদার কাছ থেকে আসেনি।

তালেবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা : আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের নথি অনুযায়ী, মোল্লা বারাদারের জন্ম আফগানিস্তানের উরুজগান প্রদেশের উইটমাক নামে একটি গ্রামে। তবে তিনি বড় হন আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহারে।  জাতিগত পশতুন বারাদার ১৯৭০ ও ৮০-র দশকে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সৈন্যদের তাড়াতে ১০ বছর যুদ্ধ করেন। এরপর মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের নেতৃত্বে ১৯৯৪ সালে যে কয়েকজন পশতুন মুজাহিদীন তালেবান প্রতিষ্ঠা করেন, মোল্লাহ বারাদার ছিলেন তাদের অন্যতম। মোল্লাহ ওমরের ডান হাত ছিলেন তিনি। জানা যায়, মোল্লাহ ওমরের বোনকে বিয়ে করেন বারাদার।

করাচি থেকে দোহা : সন্ত্রাসের মামলায় আট বছর পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন মোল্লাহ বারাদার। ২০১৮ সালের অক্টোবরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তখন এমন খবর বেরিয়েছিল যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মুক্তি চেয়েছিলেন, কারণ আমেরিকা আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ করার জন্য তালেবানের সঙ্গে মীমাংসায় বসার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সে লক্ষ্যে ওই সংগঠনের একজন প্রভাবশালী নেতার খোঁজ করছিলেন। এ খবর সত্য প্রমাণিত হয় যখন মুক্তি পাওয়ার কিছুদিন পরই বারাদার দোহায় গিয়ে তালেবানের রাজনৈতিক অফিসের দায়িত্ব নেন।

সর্বশেষ খবর