বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

জলবায়ু পরিবর্তন ঘটাচ্ছে বিপর্যয়

তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মারাত্মক বৃষ্টিপাতের ঘটনা বাড়ছে

সারা বিশ্বে এখন চলছে কোথাও চরম বৃষ্টি, কোথাও অতিগরম, কোথাও কনকনে ঠান্ডা। গত মাসে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চল, বেলজিয়ামের পূর্বাঞ্চল, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবুর্গ ও সুইজারল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা গেছে। ১২ ও ১৫ জুলাইয়ের বিপর্যয়ের কারণে শুধু জার্মানি ও বেলজিয়ামে কমপক্ষে ২২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবার এখন ইউরোপ ও আমেরিকায় শুরু হয়েছে চরম দাবদাহ। সৃষ্টি হচ্ছে দাবানলের। পুড়ে যাচ্ছে লাখ লাখ একর বনভূমি। এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে, এমন ঘটনার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন কতটা দায়ী?

গতকাল প্রকাশিত এক গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয় আরও ঘনঘন ঘটছে। ‘ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন ইনিশিয়েটিভ’ নামের উদ্যোগের আওতায় এই গবেষণা চালানো হয়েছিল। এর আওতায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ থেকে এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মারাত্মক বৃষ্টিপাতের ঘটনা বাড়ছে। অথচ অতীতে প্রতি ৪০০ বছরে এমন ধ্বংসলীলা দেখা যেত। গবেষণার ফল অনুযায়ী গড় তাপমাত্রা মাত্র শূন্য দশমিক আট শতাংশ বাড়লেই সেই সময়সীমা ৩০০ বছর পরপর বড় আকারের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও বেড়ে চলেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীর তাপমাত্রা মাত্র এক ডিগ্রি বাড়লেই বাতাস বাড়তি সাত শতাংশ পানি শুষে নিতে পারে। স্বাভাবিকভাবে সেই পানি ছাড়া হলে প্রবল বৃষ্টিপাত অনিবার্য। ইউরোপের ছয়টি দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের  ৪০ জন গবেষক সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক পূর্বাভাস দিয়েছেন। তাদের মতে, উষ্ণায়নের কারণে এমন ঘটনার আশঙ্কা এক দশমিক দুই শতাংশ থেকে নয় গুণ বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে সব দেশকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর চেষ্টা চালাতে হবে।

 এবং এমন বিপর্যয়ের জন্য আরও প্রস্তুতি নিতে হবে।

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য জার্মানির আবহাওয়া দফতর ডিডাব্লিউডির বিশেষজ্ঞ ফ্রাংক ক্লাইয়েনকাম্প বলেন, জাতিসংঘের সাম্প্রতিক জলবায়ু সংক্রান্ত রিপোর্টের সঙ্গে এই গবেষণার ফল মিলে যাচ্ছে। তার মতে, মানুষই যে পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন করছে ও এই গ্রহকে আরও উষ্ণ করে তুলছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এমন উষ্ণায়নের কারণে আরও ঘনঘন চরম আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর