শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

জিন পিংকে ফোন বাইডেনের সাত মাস পর কথা

সাত মাস পর আবার কথা হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর জিনপিংকে সৌজন্য- ফোন করেছিলেন। তারপর সাত মাস ধরে দুই দেশের শীর্ষনেতার মধ্যে কোনো কথা হয়নি। ট্রাম্পের আমলে আমেরিকা ও চীনের শীতল সম্পর্ক বাইডেনের আমলেও বিশেষ বদলায়নি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার মাধ্যমে সম্পর্ক উন্নতির চেষ্টা শুরু করলেন বাইডেনই।

বৃহস্পতিবার দুই নেতা বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা বলেছেন বলে হোয়াইট হাউসের বিবৃতির বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। হোয়াইট হাউস বলেছে, বাইডেন ও শি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ‘বিস্তৃত ও কৌশলগত আলোচনা’ করেছেন। তাদের আলোচনায় অর্থনৈতিক বিষয়ের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন এবং কভিড-১৯ মহামারী প্রাধান্য পেয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন এক মার্কিন কর্মকর্তা। ‘ইন্দো-প্যাসিফিক ও বিশ্বে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের কথা তুলে ধরেন বাইডেন। প্রতিযোগিতা যেন সংঘাতে না গড়ায় তা নিশ্চিতে দুই দেশের দায়িত্বশীল আচরণের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও দুই নেতা আলোচনা করেন,’ বিবৃতিতে বলেছে হোয়াইট হাউস।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে আমেরিকার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। ট্রাম্প আমেরিকা ফার্স্ট নীতি নিয়ে চলেছিলেন। তিনি অনেক জিনিস আমদানির ক্ষেত্রে চড়া মাসুল বসিয়ে দেন। এ নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিটনের বিরোধ শুরু হয়। সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। বাইডেন এখন অনেক ক্ষেত্রেই ট্রাম্পের নীতি থেকে সরে আসছেন। কিন্তু চীনের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক এখনো স্বাভাবিক হয়নি। আলাস্কাতে দুই দেশের প্রতিনিধিরা একবার আলোচনায় বসেছিলেন। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিংকেনও ছিলেন। কিন্তু সেখানে চীন ও আমেরিকা একে অপরের বিরুদ্ধে সমানে অভিযোগ করে যায়। দুই দেশের নিচুতলার কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনাও এগোয়নি। মার্কিন কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছিলেন, চীন সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে খুব একটা উৎসাহী নয়। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য মাসুল ছাড়াও মানবাধিকার, করোনা, পরিবেশগত বিষয়ে মতবিরোধ আছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেন সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনার রাস্তা খুলে রাখলেন। করোনার কারণে তাদের মুখোমুখি কোনো বৈঠক হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে বাইডেন সিবিএস নিউজকে জানিয়েছিলেন, তার সঙ্গে জিনপিংয়ের সম্পর্ক খুবই ভালো। জিনপিংয়ের সঙ্গে তিনি ২৪-২৫ ঘণ্টা ধরে প্রাইভেট মিটিং করেছেন। তার সঙ্গে ১৭ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন।

চীনের সরকারি মিডিয়া বলেছে, বিষয়ের গভীরে গিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং স্বতঃস্ফূর্ত আলোচনা হয়েছে।

শি বাইডেনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের চীন নীতিই দুই দেশের সম্পর্কে ‘গুরুতর ঝামেলা’ বাধিয়ে রেখেছে। দুই পক্ষই যদি অপর পক্ষের ‘মূল উদ্বেগগুলোর’ প্রতি সম্মান দেখায়, তাহলে এখনও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ক্ষেত্রে কূটনৈতিক ‘ব্রেক থ্রু’ সম্ভব; এই ইস্যু দুই দেশের সম্পর্কে ‘ইতিবাচক ফ্যাক্টর’ যোগ করতে পারে, বলেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট।

সর্বশেষ খবর