বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
নতুন স্নায়ুযুদ্ধ

এক দশকের মধ্যে চীনের কাছে হেরে যাবে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন আর্মড সার্ভিসেস কমিটি সদস্যের ভাষ্য

মাইক গালাঘার। তিনি মার্কিন আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সদস্য এবং শীর্ষ রিপাবলিকান প্রতিনিধি। তিনি বাইডেন প্রশাসনকে ‘অক্ষম’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, আমেরিকার উচিত বেইজিংয়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, চীন পারমাণবিক ক্ষেত্রে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা যুক্তরাষ্ট্র তো বটে গোটা বিশ্বের জন্য হুমকি। তার মন্তব্য, চীনের সঙ্গে বিরাজমান অস্ত্র প্রতিযোগিতার নতুন ‘স্নায়ুযুদ্ধে’ এক দশকের মধ্যেই হেরে যাবে আমেরিকা, যদি না বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কে তারা কঠোর অবস্থান নেয়।

সম্প্রতি পরমাণু ওয়ারহেড বহনে সক্ষম একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের খবর প্রকাশিত হলে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মাইক গালাঘার।

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা আমাদের বর্তমান আত্মতৃপ্তির পথ ধরে থাকি, অথবা আমাদের আশাগুলোকে ‘ইন্টিগ্রেটেড ডিটারেন্স’-এর মতো দেউলিয়া শব্দবাজিতে রাখি- আমরা দশকের মধ্যে কমিউনিস্ট চীনের সঙ্গে নতুন শীতল যুদ্ধ হারাব। পিপলস লিবারেশন আর্মির এখন আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে দুর্বল করার এবং আমেরিকান স্বদেশকে প্রচলিত এবং পারমাণবিক হামলার হুমকির জন্য ক্রমবর্ধমান বিশ্বাসযোগ্য ক্ষমতা রয়েছে।’

ফাইনান্সিয়াল টাইমস গত সপ্তাহে একটি রিপোর্ট করেছে তাতে বলেছে, আগস্ট মাসে চীন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করেছিল যা বিশ্বব্যাপী নিচু কক্ষপথে ভ্রমণ করেছিল। যেটির গতি ঘণ্টায় ২১ হাজার মাইল। মহাশূন্য থেকে কয়েক মিনিটের মধ্যে কোনো লক্ষ্যে আঘাত করার আগে পৃথিবীকে নিচু দিয়ে কক্ষপথে অতিক্রম করতে পারে ক্ষেপণাস্ত্রটি।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন, সোমবার জর্জিয়ার তিবিলিসিতে বলেছিলেন, মার্কিন সেনাবাহিনী উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ করছে। জর্জিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জুয়ানশার বুর্চুলাদজের সঙ্গে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আপনি আগে শুনেছেন যে, চীন একটি চ্যালেঞ্জ এবং আমরা সেদিকে মনোনিবেশ করতে যাচ্ছি।’ যদিও চীন এই নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে বলে অনেক আগে থেকেই খবর ছিল, তারপরও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সংবাদটি বিশ্লেষকদের কাছে বড় ধরনের বিস্ময় হয়ে এসেছে। এর মাধ্যমে আরও প্রমাণ হয়েছে যে, চীনকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে যতটা উন্নত মনে হয়েছিল, তারা আদতে তার চেয়েও অনেক বেশি এগিয়ে। গালাঘার বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের বর্তমান কার্যক্রম নিয়েই সন্তুষ্ট থাকি, তাহলে এক দশকের মধ্যেই আমরা কমিউনিস্ট চীনের বিপক্ষে নতুন স্নায়ুযুদ্ধে হেরে যাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘পিপলস লিবারেশন আর্মির (চীনের সামরিক বাহিনী) সক্ষমতা ক্রমশ বেড়ে চলেছে, যার মাধ্যমে তারা আমাদের মিসাইল প্রতিরক্ষাকে ঘায়েল করতে এবং প্রথাগত ও পারমাণবিক হামলা, দুভাবেই আমেরিকার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।’ গালাঘার যোগ করেন, বাণিজ্য চুক্তির কল্যাণে বেইজিং আমেরিকান প্রযুক্তি হাতে পেয়েছে, যেটিকে কাজে লাগিয়ে তারা নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনার সুপারকম্পিউটারকে শক্তি জোগাতে পারে।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্‌বান জানান, চীনা কোম্পানিদের সঙ্গে এমন কোনো প্রকল্প, বিনিয়োগ বা গবেষণার যৌথ উদ্যোগে না যেতে, যেগুলোর সঙ্গে প্রতিরক্ষার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কেননা এভাবে চীনা সামরিক বাহিনীর কাছে আমেরিকান প্রযুক্তি পৌঁছে যেতে পারে।

এখন পর্যন্ত আমেরিকা এবং রাশিয়াও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে এবং গত মাসে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে যে, তারা নতুন তৈরি একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। নিউইয়র্ক পোস্ট

সর্বশেষ খবর