বুধবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

মিয়ানমার জান্তা ছাড়াই আসিয়ান সম্মেলন শুরু

মিয়ানমার জান্তা ছাড়াই আসিয়ান সম্মেলন শুরু

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা আসিয়ানের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। তবে সংস্থাটির অন্যতম সদস্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে বাদ রেখেই শুরু হয়েছে এই সম্মেলন। গতকাল ভার্চুয়াল এ সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। এতে অংশ নিয়েছেন সদস্য দেশগুলোর প্রধান নেতারা। ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর (কাল সমাপ্তি) পর্যন্ত তিন দিনের এ ভার্চুয়াল সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও অংশ নেবেন।

মিয়ানমারের অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তেমন কেউ উপস্থিত হননি। ভার্চুয়াল মাধ্যমে গতকাল উদ্বোধনী অধিবেশনে আসিয়ান চেয়ার ব্রুনাই অথবা এই ব্লকের মহাসচিব- কেউই মিয়ানমারের অনুপস্থিতির বিষয়টি উল্লেখ করেননি। দেশের ভিতরে সৃষ্ট সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে সামরিক জান্তার সামনে একটি আঞ্চলিক শান্তি চুক্তি উপস্থাপন করেছিল আসিয়ান। তা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল। জান্তা সরকার তা

বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হওয়ার কারণে আসিয়ান নেতারা ওই সরকারকে তাদের সম্মেলন থেকে বাদ রেখেছে। এটা সামরিক জান্তা মিন অং হ্লাইংয়ের জন্য সবচেয়ে প্রচ- চপেটাঘাত।

১ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক সরকারের প্রধান অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সিংহাসনে বসেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। গত ১৫ অক্টোবর আসিয়ান নেতারা বিরল এক সিদ্ধান্ত নেন। তারা বার্ষিক এই সম্মেলন থেকে সেনাপ্রধান ও সামরিক জান্তা সরকারের প্রতিনিধিদের বাদ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে এতবড় ও জোরালো পদক্ষেপ এর আগে কাউকে নিতে দেখা যায়নি। উপরন্তু আসিয়ানের মূলতন্ত্রই হলো একে অন্যের দেশের ভিতরকার বিষয়ে নাক গলাবে না। কিন্তু দৃশ্যত মানবতার জন্যই তাই করেছে আসিয়ান। ফলে একে বিরল ও অত্যন্ত জোরালো এক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আসিয়ানের সদস্য হলো ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। এর আগে মিয়ানমারে যখন সামরিক শাসন ছিল, তখন ১৯৯৭ সালে সেই সামরিক সরকারের অধীনে আসিয়ানে যোগ দেয় দেশটি।

বার্তা সংস্থা এপিকে দুজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, গতকাল সম্মেলনে অরাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে মিয়ানমারের বর্ষীয়ান উচ্চ পদস্থ কূটনীতিক চ্যান আই-ইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ব্রুনাই। কিন্তু তিনি তাতে যোগ দেননি। ওদিকে তিন দিনের এই সম্মেলনে সামরিক জান্তাকে আমন্ত্রণ না জানানো অথবা তাকে এড়িয়ে সম্মেলন করার আসিয়ান সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানোর প্রতিশ্রুতি নিয়েছে সামরিক বাহিনী। বলেছে, ব্রুনাইকে তারা জানিয়ে দিয়েছে যে, মিন অং হ্লাইং অথবা মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো প্রতিনিধি ছাড়া মিয়ানমারের প্রতিনিধি হিসেবে তারা কাউকে মেনে নেবে না।

সর্বশেষ খবর