রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

মিয়ানমারে সংঘর্ষে তিন দিনে ৮৫ সেনা নিহত

মিয়ানমারে সংঘর্ষে তিন দিনে ৮৫ সেনা নিহত

মিয়ানমারে সামরিক সরকারের বিরোধীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৮৫ জান্তা সেনা নিহত হয়েছেন। গত তিন দিনে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলে সরকারবিরোধী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে সরকারি বাহিনীর সদস্যদের প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ২৫ সেনাসদস্য নিহত হন। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী। প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গত বুধবার মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী বাহিনী কাউলিন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (কেএলপিডিএফ) যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪০ জন সরকারি সেনা নিহত হয়েছিলেন। বুধবার সকালে সাগাইংয়ের কাউলিন শহরের কিউনবিনথা গ্রামের কাছে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জান্তাবিরোধী বাহিনী কেএলপিডিএফের সংবাদ প্রকাশ করে থাকে কাউলিন রিভ্যুলিউশন (কেআর)। সংস্থাটি বলছে, বুধবার ও বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষ-প্রাণহানির পাশাপাশি ওই এলাকায় পৃথক আরেকটি লড়াইয়ে জান্তা সরকারের আরও ২০ জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। কেআর-এর বরাত দিয়ে ইরাবতী বলছে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার কাউলিন শহরের পূর্বাঞ্চলে সরকারি বাহিনী এবং প্রতিরোধ বাহিনী কেএলপিডিএফের যোদ্ধাদের মধ্যে গোলাগুলিতে ২৫ জন জান্তা সেনা নিহত হয়। একই সঙ্গে ওই সংঘর্ষে তিন প্রতিরোধ যোদ্ধাও নিহত হন।

এ ছাড়া বৃহস্পতিবার কেআরের প্রকাশিত একটি ছবিতে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে সংঘর্ষে নিহত কয়েকজন সরকারি সেনার মৃতদেহ পোড়াতে দেখা যায় কেএলপিডিএফের যোদ্ধাদের। গ্রুপটি জানিয়েছে, সংঘর্ষের পর ইয়ে হতুত ও নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এক মেজরের আংশিক পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সরকারি সেনা সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে আংশিক পুঁতে রাখা অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। এ ছাড়া সংঘর্ষের আগে বৃহস্পতিবার সকালে ছয়টি গাড়িতে করে জান্তা সেনারা কাউলিনে প্রবেশ করে বলেও জানানো হয়েছে। এদিকে মিয়ানমারের সামরিক সরকারবিরোধী ছায়া সরকার বলে পরিচিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)-র প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ইয়ে-ইউ ও বুদালিন শহরে বিরোধী বাহিনীর হামলায় ১৪ জনের মতো সরকারি সেনা নিহত হয়েছেন। এনইউজির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, অক্টোবরের ১৯ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে ১২৭টি ঘটনায় জান্তা সরকারের প্রায় ২০০ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। আর আহত সেনাদের সংখ্যা ৪৪ জন। চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। রক্তপাতহীন এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং। অং সান সু চি ও তার দল এনএলডির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা বর্তমানে গৃহবন্দি বা কারাবন্দি অবস্থায় আছেন। পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে জান্তা সরকারের হাতে দেশটিতে প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়েছেন এবং ৭ হাজারের বেশি মানুষকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর