শুক্রবার, ৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কয়লা ব্যবহার বন্ধে প্রতিশ্রুতি ১৯০ দেশ ও সংস্থার

কপ-২৬ জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন

কয়লা ব্যবহার বন্ধে প্রতিশ্রুতি ১৯০ দেশ ও সংস্থার

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ১৬০ দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা। তাঁরা পরিবেশ বাঁচাতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কিন্তু তাতে আশ্বস্ত হতে পারছেন না জলবায়ুকর্মীরা। তাঁরা টেকসই পরিবেশ রক্ষায় এখনই জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন -এএফপি

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কপ২৬ সম্মেলনে কয়লার ব্যবহার বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ১৯০ দেশ ও সংস্থা। এর মধ্যে আছে কয়লার সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও চিলি। তারাই ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম জ্বালানি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে। জলবায়ু পরিবর্তনে এককভাবে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে কয়লা। আয়োজক দেশ ব্রিটেন বলেছে, এ জ্বালানি ব্যবহার বন্ধে ওইসব দেশ ও সংগঠন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে কয়লার ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল দেশের মধ্যে আছে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। তারাসহ বেশ কিছু দেশ এখনো এ-বিষয়ক প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেনি।

অঙ্গীকারে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো নিজেদের দেশে এবং বিদেশে নতুন কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়া ২০৩০-এর দশকের মধ্যে ধাপে ধাপে কয়লাবিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দরিদ্র দেশগুলোর ক্ষেত্রে এ সময়সীমা ২০৪০-এর দশক।

তবে যারা এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশের ভিতরে বা আন্তর্জাতিকভাবে নতুন করে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সব রকম বিনিয়োগ বন্ধ করবে। তারা ২০৩০-এর দশকে বড় অর্থনীতিতে পর্যায়ক্রমে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর ২০৪০-এর দশকের মধ্যে এ প্রতিশ্রুতি পালন করবে দরিদ্র দেশগুলো। ব্রিটিশ ব্যবসা ও জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী কসি করতেঙ্গ বলেছেন, কয়লার ব্যবহার বন্ধ এখন দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে যথার্থ পথে। কয়লার ব্যবহার বন্ধ করে দিতে প্রস্তুত এ বিশ্ব। ক্লিন এনার্জি দ্বারা পরিচালিত এমন একটি ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে চাইছে বিশ্ব, যেখানে পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক সুবিধা থাকবে।

ব্রিটেন বলেছে, এ-বিষয়ক বিবৃতিতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে রয়েছে পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও চিলি। তারা এমন ১৮টি দেশের মধ্যে রয়েছে যারা পর্যায়ক্রমে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করে দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।  নতুন কোনো কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও বিনিয়োগ করবে না। তবে ব্রিটেনের ছায়া বাণিজ্যমন্ত্রী  এড মিলিব্যান্ড বলেছেন, চীন ও অন্য বড় কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশাল ব্যবধান। তারা দেশের ভিতরে ক্রমবর্ধমান হারে কয়লার ব্যবহার বাড়িয়ে যাচ্ছে। তা বন্ধে প্রতিশ্রুতি দেয়নি তারা। তিনি বলেন, তেল ও গ্যাস ব্যবহার থেকে আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসার বিষয়ে কোনো কথা নেই।

যদিও বিশ্বজুড়ে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনায় অগ্রগতি হয়েছে, তবু ২০১৯ সালে বিশ্বে মোট যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে তার শতকরা প্রায় ৩৭ ভাগ কয়লাচালিত। জ্বালানি খাতকে পরিষ্কার বা বেশি উপযোগী করতে বড় রকমের বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে দক্ষিণ আফ্রিকা, পোল্যান্ড ও ভারতের মতো দেশের।

সর্বশেষ খবর