শনিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কংগ্রেসের সুদিন ফেরানোর অঙ্গীকার প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর

কংগ্রেসের সুদিন ফেরানোর অঙ্গীকার প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর

ভারতের প্রাচীন দল কংগ্রেস। ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় ছিল। তবে মাঝেমধ্যে দলে দুর্দিনও আসে। কিন্তু বর্তমানে যে দুর্দিন চলছে তা বহু সময় ধরে। এত লম্বা সময় কখনো আসেনি। সে অবস্থায় দলটির আবার সুদিন ফেরানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন নেহরু-গান্ধী পরিবারের সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। দলটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তিনি। তাঁর দাদি ইন্দিরা গান্ধী একসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাঁরই সুর ধরে সম্প্রতি এক নির্বাচনী শোভাযাত্রার মঞ্চে দাঁড়িয়ে জনতার উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমি একজন নারী, আমিও লড়তে পারি।’ সমবেত জনতাকে তাঁর সঙ্গে এ স্লোগানের পুনরাবৃত্তি করতেও বলেন তিনি। তাঁর এ মনোভাব ও উৎসাহের ওপর ভর করে ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে আগামী বছর নির্বাচনে জয়ের স্বপ্ন দেখছে দলটি। তাদের আশা, এত দিন প্রান্তিক ও বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা নারীরা যেহেতু বর্তমানে নিজেদের অধিকার আদায়ে সরব হচ্ছে তাই তারাই হয়ে উঠতে পারে নির্বাচনে জয়ে কংগ্রেস পার্টির তুরুপের তাস। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের ফল থেকেই হয়তো খানিকটা আঁচ পাওয়া যাবে, দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী কংগ্রেস ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে কি না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং একটি শক্তিশালী, আধুনিক ভারতের স্বপ্ন দেখিয়ে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসেন মোদি এবং ২০১৯ সালেও তিনি অনায়াসে পুনর্নির্বাচিত হন। অনেকের অভিযোগ, কংগ্রেস দলটি বর্তমানে খুবই সেকেলে মানসিকতার অধিকারী এবং গান্ধী পরিবারের ওপর খুব বেশি পরিমাণে নির্ভরশীল। এর মধ্যে নারীদের ওপর সহিংসতা ভারতজুড়েই একটি বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত উত্তর প্রদেশের অবস্থা সবচেয়ে সঙ্গিন। সরকারি তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী দেশের সবচেয়ে বেশি লিঙ্গ অপরাধ এখানেই ঘটে। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আশ্বাস দিয়েছেন নারীদের বর্তমান অবস্থায় পরিবর্তন নিয়ে আসার। রবিবার বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ঘাঁটি গোরাখপুরে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নারীদের বলতে চাই যে আমি তাদের জন্য লড়াই করব, কংগ্রেস পার্টি তাদের জন্য লড়াই করবে।’ তাঁর এ আশ্বাসে খুশি দেশটির নারীরা।

এ রাজ্যে যে ৪০৩টি নির্বাচনী এলাকা রয়েছে তার ৪০ শতাংশে নারীদের মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কংগ্রেস। বিষয়টিকে ভোটাররা ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করেছেন এবং গত কয়েকদিনে ৫০ জন নারীকে দলীয় ক্যাডার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে তাঁকে সাহায্য করেছে বলে জানা যায়। এ ছাড়া দলটি নারীদের নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ইলেকট্রিক স্কুটার ও স্মার্টফোন, সব নারীর জন্য সরকারি বাসে ফ্রি রাইড, বছরে প্রতি পরিবারের জন্য তিনটি ফ্রি কুকিং-গ্যাস সিলিন্ডার এবং লিঙ্গভিত্তিক চাকরি সংরক্ষণেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গোরাখপুরের শোভাযাত্রায় কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নির্মলা পাসওয়ান বলেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ওপর তাঁর আশা আছে। ‘অনেক নারীই আমাদের কাছে আসছেন দলে যোগ দিতে,’ তিনি বলেন। ‘পরিবর্তন সত্যিই আসছে এবং নারীরাই এটি নিয়ে আসছেন।’

সর্বশেষ খবর