শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আফগানিস্তানে ছড়িয়ে পড়েছে আইএস

আফগানিস্তানে ছড়িয়ে পড়েছে আইএস

মধ্যপ্রাচ্যে গজিয়ে ওঠা ইসলামী স্টেট (আইএস) এক সময় ত্রাস সৃষ্টি করে গোটা বিশ্বে। কিন্তু কয়েকটি দেশের সম্মিলিত অভিযানে আইএস এখন প্রায় নিঃশেষ। তবে মধ্যপ্রাচ্যে সংগঠনটি নিঃশেষ হলেও এখন ভয়ংকর রূপে জানান দিচ্ছে আফগানিস্তানে।

আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের প্রায় সবটিতে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট-খোরাসানের শাখা আইএস-কের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ডেবোরাহ লিয়ন্স। লিয়নস বলেছেন, আফগানিস্তানে আইএসের শাখাটি ক্রমে শক্তিশালী হচ্ছে। তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি এ উদ্বেগজনক মন্তব্য করেন। লিয়নস জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, ইসলামিক স্টেট-খোরাসান প্রভিন্সের বিস্তৃতি মোকাবিলায় তালেবানের প্রতিক্রিয়া কেবল বিচারবহির্ভূতভাবে সন্দেহভাজন আইএসকেপি যোদ্ধাদের আটক ও হত্যাতেই আটকে আছে বলে দেখা যাচ্ছে। জাতিসংঘের ওই দূত আরও বলেন, এটা এমন এক ব্যাপার, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও মনোযোগ পাওয়ার দাবিদার। তালেবানের মতাদর্শিক শত্রু আইএসকেপি কাবুলের শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় দুটো বিস্ফোরণে একজন নিহত ও ছয়জনের আহত হওয়ার দায় স্বীকার করে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর লিয়নস এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের এই দূত বলেন, তালেবান আইএসকেপির বিস্তৃতি থামাতে পারছে না।

একসময় অল্প কয়েকটি প্রদেশ ও রাজধানীতে থাকলেও আইএসকেপি-কে এখন প্রায় সব প্রদেশেই দেখা যাচ্ছে এবং তাদের সক্রিয়তাও ক্রমশ বাড়ছে, বলেন  ডেবোরাহ লিয়নস। ২০২০ সালে এই জঙ্গিগোষ্ঠীটির হামলার সংখ্যা ছিল ৬০টি, এ বছর এরই মধ্যে তারা ৩৩৪টি হামলা চালিয়েছে বলে জানান লিয়নস।

 

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে তালেবান ‘নিজেদের প্রকৃতই একটি সরকার হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা’ করছে, কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত সমাজের অন্য অংশকে তাদের শাসনব্যবস্থার বাইরে রেখেছে এবং ক্রমাগত নারীদের অধিকার খর্ব করছে।

তিনি জানান, দেশটিতে নিয়মিতই নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক সদস্য ও কর্মকর্তাদের ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের’ শিকার হওয়ার এবং ঘরে ঘরে ব্যাপক তল্লাশি চলার বিশ্বাসযোগ্য খবর পাচ্ছে  আফগানিস্তানের জাতিসংঘের মিশন। সংকটে থাকা অর্থনীতি এবং খরার কারণে শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে    আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয় আরও তীব্রতর হতে পারে বলে নতুন করে সতর্কও করেছেন তিনি। অর্থনীতিতে ধস, অবৈধ মাদক, অস্ত্র, মানব পাচার ও অনিয়ন্ত্রিত মুদ্রা বিনিময়ে ইন্ধন দেওয়া কেবল ‘সন্ত্রাসবাদেরই সহায় হতে পারে’, বলেছেন লিয়নস।

 

‘এই প্যাথলজিগুলো প্রথমে আফগানিস্তানের ক্ষতি করবে, তারপর তা পুরো অঞ্চলকে আক্রান্ত করবে,’ বলেছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর