সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নাগাল্যান্ডে ‘ভুল করে’ সেনাদের গুলিতে ১৩ গ্রামবাসী নিহত

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের নাগাল্যান্ড রাজ্যে নিরাপত্তারক্ষীরা জঙ্গি সন্দেহে গুলি চালিয়ে গ্রামবাসীকে হত্যা করার ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষে রক্তপাত ঘটেছে। নিরাপত্তা সদস্যদের গুলিতে অন্তত ১৩ গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন এবং গ্রামবাসীর পাল্টা আক্রমণে এক জওয়ানও নিহত হয়েছেন। জনতা তাদের দুটি গাড়িও জ্বালিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনা গতকাল ভোররাতে ঘটে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নাগাল্যান্ড রাজ্যের রাজধানী কোহিমাতে আসন্ন ‘হর্নবিল ফেস্টিভ্যাল’ স্থগিত করা হয়েছে। ঘটনার পর সকালে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও। সে সঙ্গে তদন্তের আশ্বাস এবং সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখারও আবেদন জানান তারা।

জেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনী সূত্র জানিয়েছে, টিরু এবং ওটিং গ্রামের মধ্যবর্তী একটি জায়গায় শ্রমিকরা একটি কয়লা খনিতে কাজ শেষে একটি ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। সে সময়ই তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা। গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ওই এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট অব নাগাল্যান্ড- খাপলং (এনএসসিএন-কে)-এর ‘ইয়ুং অং’ গোষ্ঠীর সদস্যদের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছিল সেনা সদস্যরা। ওই ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ছয়জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় আরও দুই শ্রমিকের। এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে ছুটে আসেন গ্রামবাসী। এরপর উত্তেজিত জনতা সেনাবাহিনীর দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতির সামাল দিতে নিরাপত্তাবাহিনী আবারও গুলি চালায়। একসময় দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়, এবং তাতে পাঁচ গ্রামবাসী ও একজন নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। দ্বিতীয় গুলি চালানোর ঘটনায় আরও ৯ জন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের মোন জেলার সদর শহরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গোটা এলাকায় নতুন করে অশান্তি এড়াতে প্রচুর নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। টুইট করে অমিত শাহ লেখেন, ‘নাগাল্যান্ডের ওটিং এলাকায় একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় উদ্বিগ্ন। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার সমবেদনা। নিহতদের পরিবার যাতে সঠিক বিচার পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে রাজ্য সরকার একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।’

এই ঘটনায় ট্যুইট করে কংগ্রেস সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধী লিখেছেন, ‘এই ঘটনা হৃদয় বিদারক। সরকারের উচিত এই ঘটনার জবাব দেওয়া। যখন আমাদের নিজেদের দেশের মাটিতেই সাধারণ নাগরিক, নিরাপত্তারক্ষীরা নিরাপদ নয়- সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি করছে?’

সর্বশেষ খবর