রবিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

থাই সীমান্তে মানবেতর জীবন হাজারও মিয়ানমার নাগরিকের

সেনাবাহিনীর ভয়ে তারা বাড়ি ফেরার সাহস পাচ্ছেন না

মিয়ানমারের হাজারও নাগরিক থাইল্যান্ড সীমান্তে মোয়ে নদীর পাড়ে তাঁবুতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দেশটির সেনাবাহিনীর ভয়ে তারা বাড়ি ফেরার সাহস পাচ্ছেন না। তাদের দাবি, মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের গ্রামের ওপর বোমাবর্ষণ করায় তারা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ নদী পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে শরণার্থী শিবিরগুলোর করুণ দশায় টিকতে না পেরে অনেকে নদীর এপারে মিয়ানমার অংশে ফিরে গেছেন।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী গত বছর নির্বাচিত সরকার উৎখাত করে দেশটির ক্ষমতা দখল করে। তার পর থেকে স্থানীয় নানা সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধ চলছে। হাজার হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। উদ্বাস্তু ওইসব মানুষের জন্য আরও বেশি সহায়তা দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। রয়টার্সের প্রতিনিধিরা শুক্রবার থাইল্যান্ডের অংশে মোয়ে নদীর পাড় থেকে ওপারে মিয়ানমার অংশে চারটি জায়গায় অন্তত ২ হাজার নারী-পুরুষ-শিশুকে আশ্রয় নিয়ে থাকতে দেখেছেন। তারা তারপুলিনের তাঁবুতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ত্রাণের খাবার ও পানি সংগ্রহ করতে নদী পেরিয়ে থাইল্যান্ডের অংশে আসা ৪২ বছরের সাবাল ফিউ রয়টার্সকে বলেন, ‘ওখানে (থাইল্যান্ডের অংশে)  আমাদের ভালোই ত্রাণ দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে ভিড় এত বেশি যে জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ে। এখানে আমাদের স্বাধীনতা বেশি।’ স্বামী এবং চার সন্তান নিয়ে সাবাল প্রথমে থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু থাইল্যান্ডের মায়ে সত শহরের কাছে অন্য শরণার্থীদের সঙ্গে গবাদি পশু রাখার একটি খালি গোয়ালে তারা আশ্রয় পেয়েছিলেন। রেড ক্রসের তথ্যানুযায়ী মিয়ানমারের প্রায় ৮ হাজার শরণার্থী থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়ে আছেন। রয়টার্সের পক্ষ থেকে থাইল্যান্ডের শরণার্থী শিবিরের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে থাই সরকারের মুখপাত্র বলেন, তার দেশ ‘মানবাধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদন্ডের ভিতরে থেকেই শরণার্থীদের দেখভাল করছে।’ শরণার্থীদের ঠিকঠাক দেখভালের দাবি করলেও থাইল্যান্ড সরকার জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধিদের তার দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। মিয়ানমার সরকারও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের ঢুকতে দিচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর