মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

ভয় রাশিয়ার রাসায়নিক ও জৈবিক অস্ত্র নিয়েও

ভয় রাশিয়ার রাসায়নিক ও জৈবিক অস্ত্র নিয়েও

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণকারী গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সামরিক শক্তির বিচারে বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে রাশিয়ার অবস্থান দ্বিতীয়। অন্যদিকে, ইউক্রেনের অবস্থান ২২তম। তাই দুই দেশের মধ্যে সৈন্য সংখ্যা, যুদ্ধবিমান, রণতরী বা সামরিক সরঞ্জামেও ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। শুধু কি তাই, ইউক্রেনের কাছে আধুনিক অনেক অস্ত্র থাকলেও রাশিয়ার কাছে এমন কিছু অস্ত্র আছে যা শুধু ইউক্রেন নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই নেই। এর মধ্যে রয়েছে রাসায়নিক ও জৈবিক অস্ত্র। যার একটু প্রয়োগেই মারা যেতে পারে কোটি মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীও।

পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদের মূল্যায়নকারী সংস্থা ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টের মতে, ২০১৮-এর হিসাবে রাশিয়া ফেডারেশনের মোট ৭৮৫০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে, যার মধ্যে ১৬০০টি কার্যকর।

জৈবিক অস্ত্র : সোভিয়েত জৈবিক অস্ত্র কর্মসূচি প্রাথমিকভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় (১৯৪৫ ও ১৯৭৩ এর মধ্যে) পর্যন্ত বিকশিত করেছিল। তবে তা পরবর্তীতে গোপনে অব্যগত রাখে রাশিয়া। সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭২ সালে জৈবিক অস্ত্র সম্মেলনে স্বাক্ষর করে এবং ১৯৭৫ সালে চুক্তিটি অনুমোদন করে। এরপর জৈবিক অস্ত্রের কর্মসূচিটি প্রধানত ‘বেসামরিক’ বায়োপ্রেপাট্যাট সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। সোভিয়েত জৈবিক অস্ত্র সংস্থা বায়োপ্রেপাট্যাটের প্রথম দিকের উপ-পরিচালক কেন আলিবেকের মতে, সোভিয়েত ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন এলাকায় ল্যাবগুলোতে অস্ত্র তৈরি করা হয়েছিল যার মধ্যে সমাবেশ সুবিধাসহ রয়েছে অমুতনিস্ক, পেনজা এবং পোকারভে, মস্কো, স্টিরস্কি এবং ভøাদিমিরে। এই অস্ত্রগুলো বেশির ভাগ সময়ে আরাল সাগরের ‘রিবার্থ আইল্যান্ড’ এ বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। অস্ত্রগুলো সাধারণত আকাশে নিক্ষেপ করা হতো নিচের বানরদের লক্ষ্য করে, তারপর অস্ত্রের প্রভাব নির্ধারণ করতে বানরগুলোকে নিরীক্ষণ করা হতো।

রাসায়নিক অস্ত্র : রাসায়নিক অস্ত্রগুলো মারাত্মক এবং হস্তক্ষেপ করা কঠিন। সেনা মুখোশের সৈন্যরা আধুনিক যুদ্ধের সবচেয়ে মারাত্মক ফর্মগুলোর একটি হলো রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার। পারমাণবিক, জৈবিক ও রাসায়নিক যুদ্ধক্ষেত্রটি আদ্যক্ষরা এনবিসি দ্বারা পরিচিত এবং সৈন্য ও বেসামরিক জনসংখ্যার জন্য অপ্রচলিত হুমকি হিসেবে শ্রেণিভুক্ত অস্ত্র তৈরি করে। এই অস্ত্রগুলোর মধ্যে আছে ব্লিস্টার এজেন্ট, লিউসাইট, মাস্টার্ড গ্যাস, লিউসাইট-মাস্টার্ড-মিশ্রণ (এইচএল), নার্ভ এজেন্ট : সারিন, সোমান, ভিএক্স।

এর মধ্যে নার্ভ এজেন্টের একাধিক ব্যবহারও করেছে রাশিয়া। ২০১৮ সালে ব্রিটেনের পুলিশ জানায়, একজন সাবেক রুশ গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপাল এবং তার মেয়েকে হত্যাচেষ্টায় স্নায়ুকে আঘাতকারী রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে। ওই রুশ গোয়েন্দা এবং তার মেয়েকে একটি পার্কে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে অবশ্য তারা চিকিৎসায় সুস্থ হয়। তাদের উদ্ধারে যাওয়া একজন পুলিশ কর্মকর্তা গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

নার্ভ এজেন্ট কী? নার্ভ এজেন্ট হচ্ছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক যা স্নায়ুতন্ত্রকে বিকল বা অকার্যকর করে দিতে পারে এবং দৈহিক কর্মক্ষমতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা নাভালনিকে নভিচক নামের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা করতে চেয়েছিল পুতিন প্রশাসন। তার অপরাধ তিনি পুতিনবিরোধী।

নভিচক এজেন্ট : নভিচক এজেন্টের একটি পরিসীমা ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে উন্নত এবং পরীক্ষিত হয়েছিল, কিন্তু সোভিয়েত কাজাখস্তানের পভলদর কেমিক্যাল প্লান্টের উদ্দেশ্যে নভিচক অস্ত্র উৎপাদন সাইটটি তখনো নির্মাণাধীন ছিল। বিবিসি, সিএনএন, গার্ডিয়ান।

সর্বশেষ খবর